ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাস্তবায়নের দাবিতে মুসলিম ইনস্টিটিউটের মানববন্ধন

এফএনএস (বরিশাল প্রতিবেদক) : | প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাস্তবায়নের দাবিতে মুসলিম ইনস্টিটিউটের মানববন্ধন

বরিশাল নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন অডিটোরিয়ামের সামনের নিজস্ব জমিতে মুসলিম ইনস্টিটিউটের ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ও মসজিদ নির্মাণ কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে সদর রোডস্থ নিজস্ব জমির সামনে জাতীয় ইমাম সমিতি বরিশাল মহানগর শাখার আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালীন সময় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুসলিম ইনষ্টিটিউটের সভাপতি অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুর রব। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-মডেল জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. মনির হোসেন, ইমাম সমিতির সেক্রেটারি মাওলানা মো. রুহুল আমীন, বটতলা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শহীদুল ইসলাম, প্রিন্সিপাল মাওলানা ফরিদুল আলম, জাতীয় ইমাম সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ মাওলানা এবিএম মোশাররফ হোসাইনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।

বক্তারা বলেন, জমিটি মুসলিম ইনস্টিটিউটের। জমিদাতা এখানে মুসলমানদের সন্তানদের জন্য ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার করার উদ্দেশ্যেই দান করেছিলেন। তাই এখানে মসজিদ কমপ্লেক্স, স্বাস্থ্যসেবা, কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্প, তালিমুল কুরআন, নিরক্ষরতা দুরীকরণ, ইসলামিক পাঠাগার, দারিদ্র বিমোচেন কর্মসূচী, ছিন্নমূল শিশু শিক্ষাক্রম, সমাজ কল্যাণ বিভাগ, আইসিটি পরিসংখ্যান, বস্ত্র বিরতরণসহ নানা কল্যাণমূখী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যারা এসব কর্মসূচী বাস্তবায়নে বাঁধা প্রদান করছে তারা আইনগতভাবে অবৈধ।

বক্তারা আরও বলেন-মোহামেডান ক্লাবের পক্ষে যারা বাঁধা প্রদান করছে তারা কেউ তাদের স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাছাড়া জমিদাতা ফজলে রাব্বি তাদেরকে ক্লাব করার অনুমতি দিয়েছে এমন কোন প্রমাণও তারা উপস্থাপন করতে পারেনি। আমরা সকল বাঁধা উপেক্ষা করে এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। মানববন্ধন ও সমাবেশে শেষে নেতৃবৃন্দরা তাদের কমিটির নাম সম্বলিত একটি ব্যানার সাটিয়ে দিয়েছেন।

বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৭ সালে বরিশালের জমিদার সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী বরিশাল শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকায় নিজের ৩৩ শতক জমিতে মুসলিম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে এই মুসলিম ইনস্টিটিউট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরবর্তীতে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর ওয়ারিশগণ ওই জমির একাংশে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেন। সেই থেকে জমির একাংশে মোহামেডান ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। শওকত হোসেন হিরণ মেয়র থাকাকালীন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর দান করা মুসলিম ইনস্টিটিউটের ৩৩ শতক জায়গার কিছু অংশ দখল করে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র থাকাকালীন রাতের আধারে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব ভেঙে ফেলা হয়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর মুসলিম ইনস্টিটিউটের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। গঠিত হয় মুসলিম ইনস্টিটিউটের একটি কমিটি। ওই কমিটির নেতৃবৃন্দরা ভূমি অফিসের রেকর্ড রুম থেকে অতীতের সকল কাগজপত্র উদ্ধার করে মুসলিম ইনস্টিটিউটের নামে থাকা সকল জমির খাজনা পরিশোধ করেন। সেখানে দেখা যায় এসএ দাগে কিছু জমি মুসলিম ইনস্টিটিউটের নামে আবার বিএস দাগে কিছু জমি মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের নামে। কাগজপত্র অনুযায়ী সম্পত্তির অধিকাংশ মালিকানা মুসলিম ইনস্টিটিউটের। যার দানপত্র রয়েছে বর্তমান কমিটির কাছে। মুসলিম ইনস্টিটিউটের নেতৃবৃন্দরা দালিলিক কাগজ দেখিয়ে জানিয়েছেন-এখানকার মোট ৩৩ শতক সম্পত্তির মধ্যে বরিশাল অডিটোরিয়ামের ভিতর চলে গেছে ৭ শতক। এখন অবশিষ্ট রয়েছে ২৬ শতক। এমতাবস্থায় বাকি জমি যেন বেহাত না হয়, সেজন্য সিটি করপোরেশন মুসলিম ইনস্টিটিউটের নেতৃবৃন্দকে ২৬ শতক সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে