আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং দক্ষ জনবলের অভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম পিরোজপুরের একমাত্র ডামিপং স্টেশনটি। উপকুলীয় শহর পরিবেশগত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (সিটিইআইপি) এর আওতায় ৪ একর জমির উপরে সাড়ে ৮ কোটি ব্যয়ে ২০২২ সালে ডামিপং স্টেশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলেও তা এখনো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। ফলে শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো সুফল পাচ্ছেনা পৌরবাসী।
লক্ষাধিক মানুষ বসবাসের পিরোজপুর পৌরসভার বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করণের লক্ষ্যে সিটিইআইপি এর আওতায় বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করণের লক্ষ্যে ২০২২ সালে একটি ডামিপং স্টেশন নির্মান করা হয়। স্টেশনটি ৩ বছর আগে নির্মিত হলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পুরোপুরি স্থাপিত না হওয়ায় এখনো আগের মতোই খোলা জায়গায় বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে করে পৌর শহরে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, উপদ্রব বেড়েছে মশা-মাছির। এর ফলে নানা রকম রোগের ঝুঁকি বাড়ছে পৌরবাসির। ডামিপং স্টেশনে বর্জ্য ছাঁকনি, সংগ্রহ ব্যবস্থা ও ল্যান্ডফিল সাইটসহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা থাকলেও এখনো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পুরোপুরি স্থাপিত না হওয়ায় ডামিপং স্টেশনের কোন সুফল পাচ্ছেনা পৌরবাসী।
জানা গেছে, পিরোজপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন ছাড়াও খোলা জায়গায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮ থকে ১০ টন বর্জ্য ফেলা হয়। ওইসব বর্জ্য যথাযথভাবে অপসারন ও প্রক্রিয়াজাত না করায় শহরের পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পৌরবাসীর অভিযোগ সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পটি ব্যবহারহীন হয়ে পড়ে থাকলে তা শুধু অর্থের অপচয় নয় শহরের পরিবেশ ব্যবস্থাপনার উপর পড়বে বিরূপ প্রভাব। অন্যদিকে ডামিপং স্টেশনটির ব্যবস্থাপনা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে স্টেশন কর্মীদের।
পিরোজপুর পোস্ট অফিস সড়কের ব্যবসায়ী খালিদ আবু বলেন, দোকানের সামনে পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি ডাস্টবিন রাখা হলেও অধিকাংশ সময় সেখানে ময়লা না ফেলে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। এছাড়া পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিয়মিত ময়লা আবর্জনা অপসারন না করায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে পরিবেশ মারাত্মক হুমকীর মুখে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বর্জ্য অপসারন না করায় পৌরবাসীর স্বাস্থ্যের জন্য হুমকী হয়ে দাঁড়িছে।
ডামিপং স্টেশনটি সিটিইআইপি প্রকল্পের আওতায় ৪ একর জমির উপরে ৮ কোটি ৫১ লাখ ৭ হাজার ৬৬০ টাকা ব্যয়ে ২০২২ সালে চালু হলেও দৃশ্যমান কোনো ফল পাচ্ছে না পৌরবাসী।
এ ব্যাপারে পৌরসভার সচিব মোঃ বনি আমিন বলেন, ডাম্পিং স্টেশনটিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন না হওয়া, পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত জনবল না থাকা এবং পৌরসভায় এজন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় এর কার্যক্রম ধীর গতিতে চলছে। তিনি জানান, সরকারি সহায়তা পেলে বর্জ্য ব্যবহার করে জৈব সার তৈরির পাশাপাশি ডামিপং স্টেশনটি সঠিক ভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হত।