জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার

নির্বাচনে বিলম্ব হলে ভারতের চক্রান্ত বাড়বে

এফএনএস (রকিবুল হাসান চৌধুরী রুবেল, ময়মনসিংহ) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:০৭ পিএম
নির্বাচনে বিলম্ব হলে ভারতের চক্রান্ত বাড়বে

জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, নির্বাচিত সরকারই পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করবে, ৬/৭ মাসের মধ্যে নুন্যতম সংস্কার করে নির্বাচন দেয়া সম্ভব, নির্বাচনে বিলম্ব হলে ভারতের চক্রান্ত বাড়বে।

তিনি বলেন, কিছু লোক নির্বাচনের জন্য পাগল হয়ে গেছে, এখনই নির্বাচন চায়, কেন একটু ধৈর্য ধরেন কিছু সংস্কার হোক। এই অন্তর্বতী সরকার ব্যর্থ হলে জাতীর সামনে মহাদুর্যোগ নেমে আসবে। বিচার না করে নির্বাচন করলে আবার কালো যুগ ফিরে আসবে। নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেনা জনগণ।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আর.কে সরকারী মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন,ফ্যাসিস্ট হাসিনা জুলাই অভ্যূত্থানের পর পাল্টা ক্যু করার চেষ্টা করলেন। আপনি জুডিুসয়াল ক্যু করে বিচারপতিদের দিয়ে অর্ন্তবর্তী সরকরা বতিরের চেস্ট করলেন। আপনি আনসার কান্ড, সচিবালয় ঘেরাও ও আগুন। এ দাবি সেই দাবি, হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ আমার প্রিয় এই সব সকল ধর্মের ভাইদেরকে উরেস্ক দিয়ে অরাজকতার চেস্টা করলেন। এখন সেই চেষ্টা করছেন। পাঁচ মাস যেতে পারেনি একটা সরকার, নির্বাচন নিয়ে কাজ করবে, জনগনকে নিয়ে চলবে, নাকি দিল্লিীতে বসে হাসিনার ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবে। আজকে সেই অস্থিরতা আর অরাজকতার মধ্যদিয়ে দেশের মানুষ জাতীয় ঐক্যের সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছে। আমাদের সন্তানরা যে রক্ত দিয়ে নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে সেই রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে।

তিনি আর বলেন,কিছু দলের লোকজনের যেন আর সহ্য হচ্ছেনা, এখনই নির্বাচন চায়,ভোটের জন্য পাগল হয়ে গেছে। কেন একটু ধৈর্য ধরেন কিছু সংস্কার হোক। এই অন্তর্বতী সরকার ব্যর্থ হলে জাতীর সামনে মহাদুর্যোগ  নেমে আসবে। বিচার না করে নির্বাচন করলে আবার কালো যুগ ফিরে আসবে। নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না। নির্বাচনের আগেই বিচার ত্বরান্বিত করতে হবে। দীর্ঘ ১৭ বছরের একটি কালো যুগ আমরা পার করে এসেছি। রাসূল (সাঃ) পৃথিবীতে আসার আগে যে বর্বর যুগে শিরিক, বিদআত, হত্যা, রাহাজানি, ধর্ষণ মানুষে মানুষে হানাহানি ছিলো। মানবতার যে অবিবারম রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো এই অসভ্য বর্বর যুগকে ইতিহাসের পাতায় আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে অবহিত করা হয়। আমরা ১৭ বছর একটি বর্বর জাহেলি যুগ পার করে এসেছি। যে যুগে আমাদের কোন ভোটাধিকার ছিলো না। গণতন্ত্র ছিলো না। ধর্মীয় অধিকার ছিলো না। আইনের শাসন ছিলো না। অর্থনৈতিক অধিকার ছিলো না। আমাদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, ক্ষধার্ত মানুষের খাবার নেই, নিরন্ন মানুষের আহাজারি এবং অন্নহীন বস্ত্রহীন মানুষের কান্নায় এই বাংলার আকাশ বাতাস ভারী হয়েছে।

এক দলীয় কর্তৃত্ববাদী, এক ব্যক্তি, এক নেতৃত্ব শেখ পরিবার একটি দলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জিম্মি হয়ে জাহেলিয়াতে অন্ধাকের ডুবে গিয়েছিলো। আওয়মী লীগের লোক না হলে চাকরি হবে না। তাদের ছেলে না হলে ব্যবসা হবে না। শেখ পরিবারের লোক না হলে ব্যবসা বাণিজ্য চাকরি জীবন জীবিকোর কোন নিরাপত্তা ছিলো না। আজকে সতেরো আঠারোটি বছর আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য, আমাদের সন্তানদের চাকরি-বাকরি, রাজনীতি অর্থনীতি সব তছনছ করে দেয়া হয়েছে। সেই জন্য আমরা বলি আমরাও একটি জাহেলিয়াতের যুগ পার করেছি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি।

তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্রে কথা বলে উনারা ক্ষমতায় আসলেন কিন্তু ক্ষমতায় এসে তিনি গণতন্ত্রে কথা সব ভুলে গেলেন। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ এ তিনটা নির্বাচন হয়েছে। পনেরোটি বছর পার হয়েছে আমরা ভোট দিতে পারিনি। আমওয়ামী কর্তৃত্ববাদী শাসক দিনের ভোট রাতে কেটেছে, ডামি ভোট দিয়েছে। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে ভোট দেয়ার জন্য রওনা দিয়েছে সকালে। রাস্তায় গাড়ি আটকিয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওমী লীগ আর পুলিশ লীগ ভোট কেন্দ্র যেতে দেয়নি। এরা বলেছে ভোট হয়ে গেছে বাড়ি চলে যান। জোর করে যদি কেউ ভোট কেন্দ্রে গিয়েছে তাহলে মেরে আহত করে দিয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার বলেছে ভ্যালট পেপার শেষ হয়ে গিয়েছে বাড়ি চলে যান। বাংলাদেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এটা কি গণতন্ত্র হতে পারে? এই কালোযুগে এইভাবে আমাদের ভোটাধিকারকে হত্যা করা হয়েছে। মুক্তাগাছা উপজেলা আমির অধ্যাপক  শামসুল হক  সভাপতিত্বে আরেও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ময়মনসিংহ অঞ্চল পরিচালক ড. সামিউল ফারুকী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলাম, মঞ্জুরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের আমীর মো. আব্দুল করিম, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন, সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ, সহ-সেক্রেটারি এডভোকেট মাহবুবুর রশিদ ফরাজী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি শরিফুল ইসলাম খালিদ প্রমুখ। এছাড়াও কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার, ময়মনসিংহ সাংগঠনিক সম্পাদক আল হেলাল তালুকদার সহ মুক্তাগাছা উপজেলা জামায়াতের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে