বিদেশি ব্যাংক থেকে টাকা ফেরত আনা কঠিন, বললেন দুদক প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম
বিদেশি ব্যাংক থেকে টাকা ফেরত আনা কঠিন, বললেন দুদক প্রধান

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে এখনো সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয় আয়োজিত গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টাকা ফেরত আনা অত্যন্ত কঠিন এবং জটিল প্রক্রিয়া। এ কাজে দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একসঙ্গে কাজ করলেও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, বিদেশে টাকা পাঠাতে যাদের সহযোগিতা লাগে, আগে তাদের চিহ্নিত করা জরুরি। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের দেওয়া কিছু বিবরণের ভিত্তিতে কোম্পানি গড়ে তুলে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বহু অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রেক্ষাপট তুলে ধরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ। আন্তর্জাতিক আইন, বিভিন্ন দেশের নিজস্ব প্রক্রিয়া ও তথ্য যাচাইয়ের জটিলতার কারণে এ পথ আরও কঠিন হয়ে ওঠে। চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও এ মুহূর্তে অগ্রগতি প্রত্যাশামতো নয়।

হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে দুর্নীতির তদন্ত পাঁচ বছরেও শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুদক বিচারকারী প্রতিষ্ঠান নয়, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি জানান, ১৭৭২ সাল থেকে হবিগঞ্জে সিলিকা বালু লুট হয়ে আসছে, এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

গণশুনানিতে দুর্নীতি নিয়ে কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে সুশাসন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এতে অনেক সময় রাজনীতিবিদদের ভূমিকা থেকে যায়। তার ভাষায়, “দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোরদের নির্বাচিত করলে সংকট বাড়বে, তাই দুর্নীতিবাজকে ভোট দেওয়া যাবে না।”

এদিন বিভিন্ন দপ্তরের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ পর্যালোচনা করা হয়। গত দুই সপ্তাহে জেলায় স্থাপিত দুদকের দশটি বুথে প্রায় দুইশ অভিযোগ জমা পড়ে। এর বড় অংশ রেলওয়ে, হাসপাতাল, নির্বাচন, রেজিস্ট্রি, বিআরটিএ, পাসপোর্ট অফিসসহ সরকারি দপ্তরকে ঘিরে। এর মধ্যে একই তফসিলভুক্ত অভিযোগ বাতিল করে প্রায় আশিটি অভিযোগের প্রকাশ্য শুনানি হয়েছে।

গণশুনানিতে দুদকের কমিশনার তদন্ত মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম, জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন এবং পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে