সবশেষ তিন ম্যাচে জয় নেই। ছন্দে নেই আক্রমণভাগের তারকা ফরোয়ার্ডরা। মাঠের খেলাও ছন্নছাড়া। সবকিছু মিলিয়ে ভালো নেই রিয়াল মাদ্রিদ। আর এই বাজে সময়ে স্প্যানিশ জায়ান্ট ক্লাবটির ড্রেসিংরুমেও নাকি দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিশেষ করে ক্লাবের অন্যতম সেরা ফুটবলার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ভালো নেই। কোচ জাবি আলোনসোর সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের মনোমালিন্যের কথা এখন সবারই জানা। জল গড়িয়েছে অনেক দূর। ভিনি নাকি এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ক্লাব ছাড়ছেন তিনি। লা লিগায় সবশেষ এলচের বিপক্ষে ম্যাচে শুরুর একাদশে ভিনিসিয়ুসকে রাখেননি জাবি। এ নিয়ে ম্যাচ শেষেও বিশেষ কিছু বলেননি রিয়াল কোচ। তবে ভেতরে ভেতরে নাকি গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক আরও খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। ‘দ্যা অ্যাথলেটিকের’ একটি প্রতিবেদন জানিয়েছে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র রিয়াল মাদ্রিদকে জানিয়েছেন যে তিনি চুক্তি নবায়ন করতে চান না, কারণ তাঁর কোচ জাবি আলোনসোর সঙ্গে সম্পর্ক এখনও খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এর আগে এল ক্লাসিকোতে মাঠেই কোচের ওপর রাগ ঝাড়তে দেখা যায় ভিনিকে। ম্যাচের ৭২ মিনিটে মাঠ ছাড়ার পর রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে ২৫ বছর বয়সী তারকা ফুটবলার বলেছিলেন, ‘সব সময় শুধু আমি, আমি দল ছাড়ছি, আমার চলে যাওয়া ভালো।’ এল ক্লাসিকোর পর রিয়ার মাদ্রিদের সভাপতি ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে তার ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হয়। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে আলোনসোর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে চুক্তি নবায়ন করা তার জন্য সেরা বিকল্প নয়। এই অবস্থান নাকি এখনও অনড় ভিনি। সব সমস্যার সূত্রপাত গত ৯ জুলাই, ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্যারিস সেন্ট-জার্মেইয়ের কাছে ৪-০ রিয়ালের বিধ্বস্ত হওয়ার পর । আলোনসো গুরুত্বপণূ ওই ম্যাচে ভিনিসিয়ুসকে বেঞ্চে বসানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের চোটের কারণে তাকে শুরুর একাদশেই রাখেন, যদিও তাঁর পছন্দের আক্রমণভাগের ডানপাশের বদলে ডান উইংয়ে রাখা জয়। সেই যে শুরু এরপর ভিনি ১৭ ম্যাচের মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে শুরু করেছেন, এবং চারবার বেঞ্চ থেকে খেলেছেন। ভিনিসিয়াস মনে করেন, আলোনসো তার সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করছেন না। বার্সার ম্যাচের পর সামাজিক মাধ্যমে ক্ষমাপ্রার্থনার চিঠিতে তিনি আলোনসোর নাম উল্লেখ করেননি, যদিও অন্যদের উল্লেখ করেছিলেন। সূত্র বলেছে, এটি সচেতনভাবে করা হয়েছে, যা ক্লাবে বিস্ময়ের কারণ হয়েছিল। আলোনসো ইতিমধ্যেই বলছেন, যে তার ভিনিসিয়াসের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা নেই এবং দলের নির্বাচনে রোটেশন গুরুত্বপূর্ণ। তবে সম্প্রতি তিনি পরিস্থিতির নাটকীয়তায় বেশ হতাশ হয়েছেন। এছাড়া রিয়ালে বেতন নিয়েও নাকি সন্তুষ্ট নন ভিনিসিয়ুস। ২০২২ সালে ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছিলেন তিনি। বর্তমানে ট্যাক্স বাদ দিয়ে তাঁর বার্ষিক প্রায় ১৮ মিলিয়ন ইউরো। চলতি বছরের শুরু থেকেই রিয়াল মাদ্রিদ তাকে চুক্তি নবায়ন প্রস্তাব দিয়ে আসছে, যেখানে বার্ষিক আয় প্রায় ২০ মিলিয়ন ইউরো করা হবে। তবে ভিনিসিয়াসের পক্ষ থেকে দাবি ছিল ক্লাবের ইতিহাসে রেকর্ড সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো তাঁর বার্ষিক বেতন ৩০ মিলিয়ন ইউরো করেতে হবে।