লক্ষ্ণীপুরের রামগঞ্জে বিএনপি কর্মী আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি যুবদল কর্মী ইউসুফ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব -১১। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে ঢাকার খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ-২ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইউসুফ আলী রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজের বাড়ির মৃত এরশাদ হোসেনের ছেলে ও ইউনিয়ন যুবদলকর্মী বলে জানান দলীয় সুত্র।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে লক্ষ্ণীপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১১ সিপিসি-৩ নোয়াখালী কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুন্ডু।
তিনি জানান, নিহত ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দোকান থেকে বাকি নেওয়াকে কেন্দ্র করে ইউসুফের পূর্বে বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন ২৫ নভেম্বর সকালে ইউসুফ ৩ু৪ জনকে সঙ্গে নিয়ে দোকানে গিয়ে আবারও বাকিতে মালামাল চাইতে গেলে আনোয়ার পূর্বের বাকি পরিশোধ ছাড়া আর পণ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে ইউসুফসহ তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আনোয়ারের বুকে, পেটে ও মুখে এলোপাতাড়ি কোপ দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী ফারজানা আক্তার সাথী (৩৫) একজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩ু৪ জনকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। তাকে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য রামগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত আনোয়ার হোসেন সাহারপাড়া গ্রামের মজিবুল হকের ছেলে এবং স্থানীয় বাজারে মুদি দোকান পরিচালনা করতেন। মঙ্গলবার সকালে দোকান খোলার পর মোটরসাইকেলে করে ইউসুফসহ তিনজন দোকানে ঢুকে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। নিহতের পরিবারের অভিযোগ—ইউনিয়ন যুবদল কর্মী ইউসুফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ারের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছিলেন এবং এ নিয়ে তাকে হুমকিও দেন। চাঁদা না দেওয়ায় হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পরিবার দাবি করেছে।
ভোলাকোট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম মজুমদার জানান, এলাকায় যুবদলের কোনো কমিটি নেই। তবে ইউসুফ নিজেকে যুবদল কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন। নিহত আনোয়ারও বিএনপির কর্মী ছিলেন। দুজনেরই দলে কোনো পদ ছিল না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী জানান, আনোয়ার হত্যা মামলার প্রধান আসামী ইউছুফ রামগঞ্জ থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে । জ্ঞিগাসাবাদ শেষে তাকে কোটে প্রেরণ করা হবে।