রাজারহাটে ৬২টি নার্সারীতে ফুল চাষ

এফএনএস (প্রহলাদ মণ্ডল সৈকত; রাজারহাট, কুড়িগ্রাম) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
রাজারহাটে ৬২টি নার্সারীতে ফুল চাষ

ফুল প্রকৃতির এক অপরুপ সৃষ্টি। যে কোন ফুল সৌন্দর্য ও লাবন্যের প্রতীক। হাজার বছর ধরেই ফুলকে সৌন্দর্যের প্রতীক ও আধ্যাত্নিক বস্তু হিসেবেই ধরা হয়। আবার ফুলকে কখনো কখনো ভালবাসা প্রকাশ মাধ্যম হিসেবেও ধরা হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলায় ফুল এখন বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। অনেক শিক্ষিত বেকার যুবক ফুল চাষের মাধ্যমে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলেছেন। কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ফুল চাষ করে লাভবান হওয়ার উজ্জল সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন উপজেলা কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা। সুত্র জানা যায়, রাজারহাট উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় ৬২ টি নার্সারী আছে এবং প্রতিটিতে  চারা ও ফুল উৎপাদনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। এ উপজেলায় বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে ফুল বেঁচা কেনার ধুম পরে যায়, বিশেষ করে উপজেলা শহরে ফুলকে কেন্দ্র করে রমরমা ব্যাবসাও লক্ষ্য করা গেছে। দিবস গুলোতে ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ফুল নিয়ে শহীদ মিনার,বধ্য ভূমি কিংবা অন্য কোন ঐতিহাসিক স্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন অথবা প্রিয়জনকে ফুল উপহার দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে থাকেন। উপজেলা শহরের অলি গলিতে কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে ফেরি করে ফুল বিক্রি করতে দেখা গেছে। শনিবার(৪ জানুয়ারী) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভ্রাম্যমান ফুলের দোকানগুলো থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে চারা ও ফুল কিনতে দেখা গেছে। উপজেলায় অবস্থিত নার্সারীগুলোত বিশেষ ভাবে অত্যন্ত যত্ন সহকারে ফুলের চারা উৎপাদন করছে নার্সারী মালিকরা। নার্সারীগুলোকে শীত মৌসুমে গাঁদা,বিভিন্ন রঙ্গেও গোলাপ ফুল ফুটে এক অন্য রকমের আবহ রচনা করে সৌন্দর্য পিপাসুদের নজর কেড়ে নিয়েছে। নার্সারী গুলোতে বেশ কিছু লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। রাজারহাট-কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিতত ”জয় নার্সারী” গিয়ে কথা হয় মালিক দিলীপ চন্দ্র রায়ের সাথে। তিনি জানান,  ছাত্র জীবন থেকে (২৮-৩০ বছর ধরে)  নার্সারীর সাথে জড়িত তিনি। জমি ভাড়া নিয়ে প্রায়  ৩ একর জমিতে তিনি এই নার্সারী গড়ে তুলেছেন। এখানে বিভিন্ন রং ও জাতের গোলাপ, গাঁদা,ভারভেনা, কুইন, সুফিয়া ও কসমস সহ প্রায় ৫০ প্রকার ফুল আছে। তার নার্সারীতে পুরুষ মহিলা মিলে ৩শ থেকে ৩শ ৫০ টাকা দিন হাজিরায় প্রায় ৭/৮ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেন। এবারে বিজয় দিবস উপলক্ষে তার নার্সারী থেকেই প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। গড়ে প্রতি মাসে তার ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা আয় হয়।  নারী শ্রমিক তপতী রানী জানান, আমিসহ এখানে আমরা প্রতিদিন ৭/৮ জন কাজ করে যে টাকা পাই সংসার ভালই চলতেছে, আমরা উপকার পাচ্ছি। এছাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বিভিন্ন বাহারি নামের সুন্দর সুন্দর নার্সারী লক্ষ্য করা গেছে। রাজারহাট উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলায় ছোট বড় মিলে প্রায় ৬২ টি নার্সারী আছে। ফুলের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে প্রতিটিতে নার্সারীতে আলাদা বেড তৈরী করে চারা ফুল ও উৎপাদনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। সরকারি ভাবে কোন সহযোগিতা পেলে আমরা ব্যাপকভাবে ফুল উৎপাদন করতে সক্ষম। এছাড়া নার্সারীগুলো বিনোদনের স্পর্ট হিসেবে গাছ ও ফুল প্রেমিদের মনোরঞ্জন করতে পারে বলেও তিনি জানান।রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার সাথী জানান, নার্সারীগুলোতে ফুলের প্রতি আগ্রহ দেখে ভাল লেগেছে। সরকারি ভাবে ফুল নিয়ে কোন নির্দেশনা আপাতত নেই, কোন নির্দেশনা আসলে অবশ্যই নার্সারী মালিক সমিতির সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে