কক্সবাজার থেকে বদলিজনিত কারনে বিদায় নিচ্ছেন মানবিক ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী। তিনি কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে যোগদানের পর থেকে একের পর এক মানবিক কাজ করে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেন।
সর্বশেষ সাড়ে পাঁচ বছরের বুশরার হার্টে ছিদ্র রয়েছে, যা অপারেশন না করলে যেকোনো সময় তার প্রাণহানি ঘটতে পারে। বুশরা সদর উপজেলার ঝিলংজার দক্ষিন হাজী পাড়ার সন্তান। তার বাবা বেলান হোসেন কৃষিকাজ করে, সংসারের চলতেও নুন আনতে পান্তা ফুরোয়।
১৭ নভেম্বর বুশরার মা মরিয়ম খাতুন আর্থিক সহায়তার আবেদন নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফার ইয়াসমিন চৌধুরীর কার্যালয়ে হাজির হন। ছোট্ট মেয়েটিকে দেখে কর্মকর্তার ভেতর মানবিক অনুভূতি জাগে। তিনি বলেন, “মাত্র ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার জন্যে এই শিশুটি ধুঁকে ধুঁকে মরবে-এ ভাবনা মনে আঘাত দিয়েছে।”
উপজেলা প্রশাসক জানান, উপজেলা পরিষদের বাজেট থেকে এত টাকা দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে, দীর্ঘ ১০ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় এবং এনজিওর সঙ্গে যোগাযোগ করে অবশেষে একটি এনজিও বুশরার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে রাজি হয়। তারা বুশরাকে ঢাকার হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করাবে।
বুশরার মা মরিয়ম খাতুন জানিয়েছেন, উপজেলা কর্মকর্তার উদ্যোগের কারণে মেয়ের চিকিৎসার কাজ শুরু হয়েছে। এনজিওর সঙ্গে দেখা হয়েছে, চিকিৎসার কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে এবং দ্রুত বাকী কাজ সম্পন্ন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী ফেসবুকে এই অভিজ্ঞতার কথা লিখে মানবিক কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তার অফিসে আসা বুশরাকে কাছে ডাকেন, পাশে দাঁড়ান-এমন মানবিক উদাহরণ স্থানীয় মানুষদের হৃদয়ে দাগ কেটেছে।
মায়ের আশায় বুশরা সুস্থ হয়ে উঠবে, মুখে হাসি ফিরবে। যদিও প্রতিবেদনের সময় জানা গেছে, নীলুফার ইয়াসমিন চৌধুরীর বদলির আদেশ হয়েছে, তবু স্থানীয়রা আশা করছেন প্রশাসনের মানবিক ও সেবামূলক প্রচেষ্টা ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে।