ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে বৃহত্তর সুন্নি জোট

মোঃ আল-আমিন দেওয়ান; কালীগঞ্জ, গাজীপুর | প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে বৃহত্তর সুন্নি জোট
সারা দেশে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তিনটি ইসলামি দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘বৃহত্তর সুন্নি জোট’। দলগুলো ইতোমধ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৩ দফা দাবি আদায়ে জোটের ব্যানারে মাঠে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদায় বিশ্বাসী সারা দেশের ১২ হাজার দরবারকেও আলাদা জোটের ব্যানারে এক ছাতার নিচে আনা হচ্ছে। নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সমমনা আরও দল যুক্ত করে জোট সম্প্রসারণের কাজও চলছে। এ জোটের পক্ষে ইসলামিক বক্তা হিসাবে পরিচিত গিয়াস উদ্দিন আততাহেরীসহ জনপ্রিয় ইসলামী বক্তারা প্রচারণাও শুরু করেছেন। যে তিন দলের অ্যালায়েন্স বা রাজনৈতিক জোট হয়েছে সেগুলো হচ্ছে; ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। মাজার-দরবারে হামলা-ভাঙচুর, আলেম-ওলামাদের হত্যাসহ নানা ইস্যুতে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরার লক্ষেই এ ঐক্য গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তিন দলের তিন চেয়ারম্যানও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হিসাবে অংশ নেবেন। এরা হচ্ছেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের (চেয়ার) চেয়ারম্যান আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের (মোমবাতি) চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি বিএসপির (একতারা) চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ আল হাসানি আল মাইজভান্ডারি। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিন বলেন, ‘দাবি-দাওয়া পূরণ, অধিকার আদায় এবং রাষ্ট্রের কল্যাণ করতে গেলে সংসদে যাওয়ার বিকল্প নেই। তাদের দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। কিন্তু ১৬ বছর যেভাবে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে তা নজিরবিহীন। ওই সময়ে কোনো কোনো নির্বাচনে তার দল অংশ নিলেও স্বৈরাচারী আচরণের কারণে আবার নির্বাচন বয়কটও করেছে। ২৪ এর অভ্যুত্থান ও ছাত্র-জনতার রক্তের সিঁড়ি বেয়ে দেশ এখন গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে। তাই তিন দলের সমন্বয়ে তাদের যে জোট হয়েছে সেই জোট সারা দেশে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। দলের চেয়ারম্যান হিসাবে তিন দলের প্রধানগণ নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে কে কোন আসনে নির্বাচন করবেন সেটি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। একই সঙ্গে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সমমনা দল নিয়ে এই জোট আরও সম্প্রসারণের কাজ চলছে বলে জানান তিনি। জানা গেছে, তিন ইসলামী দলের সমন্বয়ে রাজনৈতিক জোটের ঘোষণা দেয়া হয় ৩০ আগস্ট। জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বৃহত্তর সুন্নি জোট’ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে এই জোট। ইতোমধ্যে জোটের পক্ষ থেকে ১৩ দফা দাবিতে বিভাগীয় শহরে জনসভা করা হচ্ছে। ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের লালদিঘি মাঠে বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়। আগামী ১০ ডিসেম্বর সিলেটে, ২২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জনসভার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর নারায়াণগঞ্জ এবং সর্বশেষ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার আয়োজন করা হবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। এ জোটের ১৩ দফার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা, নির্বাচনের আগে কম্বিং অপারেশনের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার করা, দুর্নীতিবাজ, কালোটাকার মালিক, অর্থপাচারকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, জুলাই ও জুলাই-পরবর্তী সব হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডত্বের প্রশ্নে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশি মদদপুষ্ট সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে না দেওয়া, আরাকান আর্মিকে করিডর না দেওয়া।
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে