ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। মক ভোটিং পর্যবেক্ষণের পর তিনি বলেন, নির্বাচন এবং গণভোটের প্রস্তুতি একযোগে চলছে, আর সময় ব্যবস্থাপনার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রয়োজন হলে ভোটকেন্দ্র ও বুথ বাড়ানো হবে।
শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মক ভোটিং পরিদর্শনে গিয়ে সিইসি বলেন, তফসিল ঘোষণার তারিখ নির্বাচন কমিশন যথাসময়েই জানাবে। গত মঙ্গলবার গণভোট সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর থেকেই কমিশন প্রস্তুতি নিয়ে কাজে নেমেছে। তিনি জানান, সরকার ও ইসি যৌথভাবে গণভোট বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাবে, আর সেই প্রচারণা শুরু হলে ভোটাররা পুরো প্রক্রিয়াটি আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন।
গণভোটের ব্যালট, ভোটের সময় ও সার্বিক সময় ব্যবস্থাপনা নিয়ে সিইসি জানান, আজকের মক ভোটিং থেকেই বাস্তব অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করা হচ্ছে। একজন ভোটারকে ভোট দিতে কত সময় লাগছে এবং গণভোটের ব্যালট যুক্ত হলে অতিরিক্ত সময় কত দরকার, সেটি হিসাব করেই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, খরচের চেয়ে ভোটারের সুবিধাই বড় বিষয়, তাই প্রয়োজন মনে হলে বুথ বা পোলিং স্টেশন বাড়ানো হবে।
মক ভোটিংয়ে কিছু ভোটার গণভোটের হ্যাঁ ও না বুঝতে না পারায় তিনি বলেন, এটি অস্বাভাবিক নয়। যেহেতু প্রচারণা শুরু হয়নি, তাই প্রচার বাড়লে ভোটাররা বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। তিনি জানান, গণভোটের চারটি প্রশ্ন বান্ডেল আকারে দেওয়া হবে এবং আইনগত কারণে আলাদা করে প্রতিটি প্রশ্নে ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, আগের তুলনায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পুলিশ, আনসার, বিজিবি ও সেনাবাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে কাজ করছে। তিনি মনে করেন, দেশজুড়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকলেও সামগ্রিক পরিস্থিতি নির্বাচন উপযোগী।
সাংবাদিকদের ভূমিকা প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, গণভোটের বিষয়গুলো প্রচারে মিডিয়ারও দায়িত্ব আছে। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা নির্বাচনী কেন্দ্রের ভেতরে গেলে ভিড় ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে, তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে বেরিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এটি সাংবাদিকতার কাজে বাধা নয়, কেন্দ্র পরিচালনা সহজ রাখার প্রয়োজন থেকেই এ ব্যবস্থা।
সকালে শুরু হওয়া মক ভোটিংয়ে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে ৫১০ জন ভোটার অংশ নেন। দুই ধরনের ব্যালট এবং ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ভোটারদের সামনে তুলে ধরে নির্বাচন কমিশন জানায়, মক ভোটিংয়ের উদ্দেশ্য হলো ভোটারদের প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত করা এবং বাস্তব পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা।