পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি বিসিক শিল্পনগরী ভূতুড়ে পরিবেশে পরিণত হয়েছে। নেই সীমানা প্রাচীর, বহিরাগতদের অবাধ চলাচলে বাড়ছে মাদকের আড্ডা, নেই জেনারেটর, বিদ্যুৎ চলে গেলেই অন্ধকার চাদরে দুর্বৃত্তদের আনাগোনা, সও দেহ ব্যাবসাও চলে বলে জানান স্থানীয়রা। অব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো সংস্কারের অভাব, গরুর-ছাগলের অবাধ বিচরণ, অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ভাঙাচোরা, গর্তে ভরা, সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেনগুলোতে, পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়, নেই ফায়ার সার্ভিসের ন্যূনতম সরঞ্জাম, নোংরা ও জরাজীর্ণ নগরীর ভবন গুলো, বিসিকের প্রাণভোমরা, খালটি শুকিয়ে মৃত্যু প্রায়। বিসিকের প্লটগুলোতে যুগের পর যুগ ঝুলছে তালা ও সাইনবোর্ড। কিছু প্রতিষ্ঠান চালু থাকলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই কার্যত অচল অবস্থায়। শিল্প উদ্যোক্তারা জানায়, এসব প্রতিকূলতায় শিল্প স্থাপন চালু করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বিসিক নগরী অফিস সূত্র জানায়, ”১৯৬০ সালে ২৪.৭৪ একর জমি অধিগ্রহণ করে ১৬৯ টি ইউনিট স্থাপন করে ১৯৬১ সালে উপজেলার সুটিয়াকাঠি গ্রামে কৌরিখাড়ায় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প নগরী (বিসিক)প্রতিষ্ঠানটি চালু হয়”। ৬৫ বছরেও উন্নয়নের আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। বরাদ্দকৃত প্লট ও ভবনগুলো লতাপাতায় ছেয়ে জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা শফিকুল ইসলাম বলেন,”নানানবিধ সমস্যায় নূতন বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন শিল্প উদ্যোক্তারা, দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে স্বরূপকাঠি বিসিক শিল্প নগরী পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়ব”।শিল্প মালিক চুন্নু মোল্লা বলেন, রাস্তা, ড্রেনেজ, খাল পুনঃখনন, ফায়ার সার্ভিস ব্যবস্থা ও সীমানা প্রাচীর নিশ্চিত করে অবকাঠামো উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
স্বরূপকাঠি বিসিক শিল্প নগরী কর্মকর্তা রিয়াজ উল হাসান বলেন, যে সমস্ত শিল্প ইউনিট বন্ধ অবস্থায় রয়েছে সে সকল ইউনিট গুলো খুব দ্রুত চালু করার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে শিল্প উদ্যোক্তাদের লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। তবে বিসিক শিল্প নগরীতে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে, সীমানা প্রাচীর ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নেই, আভ্যন্তরী রাস্তাও ড্রেনগুলো অকেজো, বিসিকের একমাত্র খালটিও ভরাট হয়ে গেছে অনেক আগেই, এতে শিল্প মালিকদের মালামাল আমদানি ও রপ্তানিতে সমস্যা হচ্ছে। এসব ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মহোদয় কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে এবং এসব সমস্যা সমাধানে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের সাথে মিটিংয়ে উত্থাপন করা হয়েছে। আশা রাখি বর্তমান অর্থবছরে এর অনেকটাই সমাধান হবে