পিরোজপুরের কাউখালীতে দিন দিন বাড়ছে মালটা জাতীয় ফলের বাগান। লাভ ভালো থাকায় কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই জাতীয় ফলের আবাদ। কাউখালীর উৎপাদিত মাল্টার পুষ্টি, স্বাদ, ঘ্রান ও রং এর দিক থেকে আমদানিকৃত বিদেশি মালটার চেয়ে কোন অংশে কম নয় বলে দাবি কৃষি অধিদপ্তরের।
এ ছাড়া আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণ অনুকূলে থাকায় কৃষিনির্ভর এ জেলায় রয়েছে মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা। এখানকার মাল্টা খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়। প্রতি কেজি মালটা পাইকারি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হলেও, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মালটা ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে কাউখালী মালটা চাষী সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান ।
যে কারণে বাগানগুলো দেখতে দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন। একসময় মাল্টা ফল দুর্লভ হলেও বর্তমানে অত্যন্ত জনপ্রিয় ফল মাল্টা। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সমৃদ্ধ এ ফলে রয়েছে প্রচুর ঔষধি গুনাগুন। কাউখালী উপজেলায় রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক মাল্টার বাগান। মাল্টা এখন লাভজনক ফসল হওয়ায় অনেক কৃষক ও নতুন উদ্যোক্তারা তারা মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
কাউখালী উপজেলার সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নে প্রফেসর ইয়াকুব হোসেনের রয়েছে এ উপজেলার ভিতরে সর্ববৃহৎ মাল্টার বাগান ৩০ বিঘা জমিতে সে প্রতিবছর মাল্টা চাষ করে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি করেন।
কৃষি অধিদপ্তরের এস এস সি পি প্রজেক্টের আওতায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের গান্ডতা গ্রামে মীর জিয়া ৭০ শতাংশ জমিতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উন্নত জাত বারি- ১ মালটার প্রায় ৩০০ টি চারা লাগান। তিনি মালটা চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছে।
কাউখালী সফল উদ্যোক্তা মাল্টা চাষী মীর জিয়া বলেন, এ বছর মন প্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা করে মালটা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৮/১০ লক্ষ টাকার মালটা বিক্রি করা হয়েছে। বাগান থেকে আরো ৫ লক্ষ টাকা মালটা বিক্রি করা যাবে। গত বছর মালটার দাম কম থাকায় ৭ লক্ষ টাকার মালটা বিক্রি করেছি। জিয়ার বাগানের মালটা বড়, রসালো ও সুমিষ্টি। বাগানে প্রায় প্রতিটি গাছের ডালে থোকায় থোকায় সবুজ ও হলদে রঙের মালটা ঝুলছে।
কাউখালীর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পবিত্র কুমার বলেন, মাল্টা চাষে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছে। তাই অনেকেই মালটা চাষে আগ্রহী হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত বাগানে গিয়ে মাল্টা চাষীদের সব ধরনের কীটনাশক সহ পরামর্শ দিয়ে থাকি।
উপজেলা কৃষি অফিসার সোমা রানী দাস বলেন, এ অঞ্চলের মাটি মালটা চাষের জন্য বেশ উপযোগী, মাটির গুনাগুন ভালো। এখানকার উৎপাদিত মালটা স্বাদ,ঘ্রান ও বেশ রসালো। গত বছর কাউখালীতে প্রায় তিনশত মেট্রিক টন মালটা উৎপাদন হয়েছে। মালটা কৃষকরা প্রায় তিন কোটি টাকার মালটা বিক্রি করেছে। এবছর ফলন ও দাম দুটোই ভালো থাকায় গত বছরে তুলনায় কৃষকরা আরো বেশি লাভবান হইবে।