নীলফামারীর সৈয়দপুরে পৌষের শেষে এসে বাড়ছে শীতের দাপট। ওই শীত ক্রমান্বয়ে শুধু বেড়েই চলেছে। ফলে অসহায় মানুষজন শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে। সরকারি ভাবে শীতের কম্বল বিতরণ করা হয়েছে তবে তা ছিল চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে শীত নিবারণে ওই মানুষগুলো গরম কাপড়ের জন্য ছোটাছুটি করতে থাকে অনেকের দাঁরে দাঁরে। ওই সকল ছিন্নমূল মানুষের পাশে আবার কেউ কেউ এসেছে কম্বল নিয়ে। তবে যে ধরনের কম্বল তাদেরকে দেয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। ফলে কম্বল পাওয়ার পর তাদের অভিযোগ,যে কাপড় দিয়ে শীত নিবারণ হয় না সে কাপড় দেয়ার কি প্রয়োজন ছিল। সৈয়দপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মীর্জা মোঃ আবু ছাইদ জানান,দুই দফায় সরকারি কম্বল পাওয়া গেছে। ওই কম্বলগুলো সাথে সাথেই অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আবার সরকারি বরাদ্দ এলে তা শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে। পৌষ মাসের প্রথম দিকে তেমন একটা শীত ছিল না নীলফামারী জেলায়। পৌষের শেষ দিকে এসে বাড়তে থাকে শীত। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় মানুষ কাতর। শীত নিবারণে অনেকে ছুটছেন গরম কাপড়ের দোকানে। আর এ সুযোগে কতিপয় ব্যবসায়ি দামও হাঁকছেন বেশি । সন্ধ্যার পর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত আকাশ ভরে যাচ্ছে কুয়াশার চাদরে। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত থাকছে কুয়াশা। কোন কোন সময় হঠাৎ সূর্যের মুখ দেখা গেলেও তা স্থায়ী থাকছে না। এ এলাকায় অনেকটা জেঁকে বসে শীত। সাথে বইছে এলোমেলো হাওয়া। সৈয়দপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্র জানায়, প্রায় দিন সকালে তাপমাত্রা থাকে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে। কোন কোন দিন নয় ও আটে নেমে থাকে। সৈয়দপুর শহরে বাজার করতে আসা আশরাফ আলি জানান, আমি খেটে খাওয়া একজন মানুষ। প্রতি বছর শীত এলে অনেকেই কম্বলের স্লিপ বাড়িতে দিয়ে যায়। এবছর কোন স্লিপ কেউ দেয়নি। পত্রিকা বিক্রেতা হিটলার ও পলাশ জানায়, আমাদের প্রতি কেউ নজর দেয় না। প্রচন্ড শীতে সাতসকালে বাইসাইকেল নিয়ে বের হই পত্রিকা বিক্রি করতে। পাঠকদের বাসায় বাসায় পত্রিকা পৌঁছে দেই। কোন একজনও বললো না শীত লাগে কি না। কেউ পাশে এসে সহযোগিতাও করে না কম্বল দিয়ে। কোন কোন বছর শীতের সময় পত্রিকার মালিক পক্ষ থেকে জ্যাকেট ও কম্বল দেয়া হত। এবার তাও নেই। আরেক পত্রিকা বিক্রেতা বিমল রায় জানায়, তার বাসা পাবর্তীপুর উপজেলার বেনিরহাট এলাকায়। প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা বাইসাইকেল চালিয়ে সৈয়দপুর শহরে আসে পত্রিকা বিক্রি করতে। সারাদিন পত্রিকা বিক্রি করে বিকেলে বাসায় যায়। আবার রাতে এসে পত্রিকার বাকি দেয়া বিল উত্তোলন করতে হয় । শীতে তার কষ্টের সীমা থাকে না বলে জানায়। এদিকে পত্রিকা বিক্রেতা নুর ইসলাম,আলতাফ, আরশাদ,সোবহান জানান, শীতকালে আমাদের খুবই কষ্ট হয়। অনেকে ঠান্ডায় অসুখে আক্রান্ত হন। তবুও পেটের দায়ে সংসার চালাতে ভোরে ঘর থেকে বের হই। সারাদিন পত্রিকা বিক্রি করে রাতে বাসায় আসি। এবার কারো কাছ থেকে কোন কম্বল পাওয়া যায়নি। সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম জানান,শীতে তিনি জমিতে কাজ করতে পারছেন না। প্রচন্ড ঠান্ডার কাছে তিনি হার মেনেছেন।