ফজলুর রহমানের মন্তব্যে আদালত অবমাননার অভিযোগ, ট্রাইব্যুনালে হাজিরার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম
ফজলুর রহমানের মন্তব্যে আদালত অবমাননার অভিযোগ, ট্রাইব্যুনালে হাজিরার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে টকশোতে দেওয়া মন্তব্য আদালত অবমাননার শামিল কি না, তার ব্যাখ্যা দিতে বিএনপি নেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুর রহমানকে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। রোববার (৩০ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল ১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন প্যানেল সিদ্ধান্তটি জানায়। আগামী ৮ ডিসেম্বর তিনি একাডেমিক সনদ ও বার কাউন্সিলের সনদসহ আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের বক্তব্য ব্যাখ্যা করবেন।

ঘটনার সূত্রপাত ২৩ নভেম্বর একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো থেকে। ওই অনুষ্ঠানে ফজলুর রহমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গঠন এবং বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনামূলক মন্তব্য করেন। তার বক্তব্যের কিছু অংশ পেনড্রাইভে সংরক্ষণ করে গত ২৬ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় প্রসিকিউশন। এরপরই আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, তিনি টকশোতে বলেন যে তিনি এই কোর্ট মানেন না এবং এই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার হতে পারে না। এছাড়া প্রসিকিউশন সম্পর্কে তিনি এমন মন্তব্য করেন যা আদালতের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে।

ট্রাইব্যুনালে শুনানিতে প্রসিকিউশন জানায়, ফজলুর রহমান আইন না বুঝেই বিরূপ মন্তব্য করেছেন। প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, “তিনি বলেছেন এই কোর্টের গঠনপ্রক্রিয়া সঠিক নয় এবং এই কোর্টে বিচার হতে পারে না। ট্রাইব্যুনালের বিচার মানেন না বলেও স্বীকার করেছেন।” শুনানির সময় টকশোর অংশ বাজিয়ে শোনানো হলে ট্রাইব্যুনাল মন্তব্যগুলোর গুরুত্ব বিবেচনায় নেন। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হতে পারে।

ট্রাইব্যুনাল এও জানতে চায়, ফজলুর রহমানের পরিচয় শুধুই আইনজীবী কি না। প্রসিকিউশন জানায়, তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ ৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এবং দলের পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জুলাই আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করায় এর আগেও তার পদ স্থগিত করা হয়েছিল। ফজলুর রহমান অতীতে এ আসন থেকেই দুবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং দীর্ঘদিন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

ট্রাইব্যুনাল জানায়, এ আইন ১৯৭৩ সালে প্রণীত হয়েছে এবং এই আইনের আওতায় ১৯৭৩ সালের আগে ও পরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা যায়। তাই আদালত প্রসিকিউশনের আবেদন ও ভিডিও প্রমাণ পর্যালোচনা করে তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে