ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর শাস্তি বাড়ানোর দাবি নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। রোববার (৩০ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. গোলাম কিবরিয়া জনস্বার্থে রিটটি দাখিল করেন। তিনি জানান, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় বর্তমানে দুই বছরের বেশি কারাদণ্ডের বিধান নেই, যা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারছে না।
রিট আবেদনটি বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি আসিফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে। এতে আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। রিটকারীর যুক্তি, আইনগত শাস্তির সীমা কম হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো, কটূক্তি করা কিংবা ধর্মের প্রতি অবমাননাকর আচরণ বাড়ছে।
অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ পেনাল কোড এবং নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে এই অপরাধের জন্য দুই বছরের সাজা রাখা হয়েছে, যা অপর্যাপ্ত। তিনি মন্তব্য করেন, “এই শাস্তি এতটাই কম যে অনেকে মহান আল্লাহ, আমাদের নবী কিংবা ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে কটূক্তি করার সাহস পাচ্ছেন। এটি সমাজে অস্থিরতা তৈরি করে।” তিনি আরও বলেন, শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ দণ্ড, এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখলে অপরাধীরা নিরুৎসাহিত হবে।
আইনজীবী কিবরিয়া জানান, রিটে সংসদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে যাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সংক্রান্ত মামলার শাস্তি পুনর্বিবেচনা করে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়। তার মতে, কঠোর আইন থাকলে এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি স্থিতিশীল থাকবে।
ঘটনাটি নিয়ে আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, বর্তমান আইন থাকলেও এর প্রয়োগ ও তদন্ত প্রক্রিয়ার দুর্বলতার কারণে অনেক অপরাধই ধরা পড়ে না। অন্যদিকে, শাস্তি বাড়ানোর দাবি কিছু মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান কতটা প্রয়োজন, তা নিয়ে আগামীতে আদালত ও আইন মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আরও বিতর্ক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।