পাথরঘাটায় বিএনপির ওলামাদল নেতাকে আ’লীগ সাজিয়ে নাশকতার মামলা

এফএনএস (পাথরঘাটা, বরগুনা) : | প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম
পাথরঘাটায় বিএনপির ওলামাদল নেতাকে আ’লীগ সাজিয়ে নাশকতার মামলা

বরগুনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় পাথরঘাটা স্থানীয় ওলামা দলের এক নেতার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে এমন অভিযোগ করেছেন। পাথরঘাটা প্রেসক্লাব কার্যালয় গতকাল রোববার সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন পাথরঘাটা উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামাদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম মোল্লা (৪৮)। এ ঘটনায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতার সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে আওয়ামীলীগ নেতাদের সঙ্গে তাকেও আসামি করা হয়েছে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন। আব্দুর রহিম মোল্লা (৪৮) পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের হাড়িটানা মৃত সুলতান মোল্লার ছেলে ও পদ্মা স্লুইস বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী।

পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে লিখিত সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে পাথরঘাটা উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। একই সঙ্গে বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৮১ নম্বর সদস্য। কিন্তু সুন্দরবন ঘেষা চরদুয়ানী এলাকার জ্ঞানপাড়া মধ্যচরে মহিষ পালন নিয়ে আমার স্ত্রীর ছোট ভাই মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে  বিরোধে বিভিন্ন মামলার জের ধরে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মাহাবুর রহমান সুমন মোল্লার সঙ্গে আমার শ্যালক মিজানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ওই দ্বন্দ্বের রেষ ধরে আমাকে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দেখিয়ে মামলায় ১০৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। মূলত পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন নিজলাঠিমারা নিবাসী শামসুল আলম সিকদার।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে করা বরগুনা সদর থানায় ওই মামলার বাদী বরগুনা সদর উপজেলার ৭ নং ঢলুয়া ইউনিয়নের চরকগাছিয়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মোঃ বাদল। তার সঙ্গে আমার চেনা জানা পরিচয় ছাড়াও কোন বিরোধ নেই।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, ফাহিম মাহমুদ ইউনুচ কে (৩০) আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ১২৯ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ফাহিম মাহমুদ ইউনুচ মূলত বিএনপির অংগ সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অতি সম্প্রতি পাথরঘাটার কালমেঘা ইউনিয়ন যুবদলের বর্ধিত সভায় তিনি কালমেঘা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন। মোঃ সোহাগ মিয়া পাথরঘাটা পৌর শহরে কম্পিউটার অনলাইন ও প্রিন্টিং মিডিয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তাকে ১২৩ নম্বর ও তার ছোট ভাই পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন শ্রমিকদলের নেতা আল আমিন মিয়াকে ১২৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় আসামি হওয়ার দাবি করেছেন আরও তিন ব্যক্তি। এরা হলেন পাথরঘাটা পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড জামাতের সভাপতি গোলাম ছগির মিন্টুর ছেলে গোলাম মোর্তুজা, সাবেক সেনা সদস্য নাসির খান ও ব্যবসায়ী রাসেল খান। এছাড়াও আওয়ামী লীগের ওই মামলায় আরও আসামি হয়েছেন চরদুয়ানী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জসিম মৃধা। জসিম মৃধাকে চরদুয়ানী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হিসেবে ৫৯ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় চরদুয়ানী ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে পাঁচ শতাধিকেরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণে গত বুধবার প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মো. ফারুক বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ওই মামলায় বেশ কিছু বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে আসামি করা হয়েছে। এটা অবশ্যই উদ্দেশ্যে প্রণোদিত  ও গভীর ষড়যন্ত্র। তবে এ ঘটনায় আমরা উপজেলা বিএনপি'র পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। তবে বিএনপি নেতা কর্মীদের এ মামলার পিছনে যে বা  যাদের ইন্দন থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে