কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে টিআর,কাবিটা ও কাবিখা প্রকল্পের কাজ না করে অর্থ আত্মসতের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তার এর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলেন ওই ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন অফিসে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।জানা গেছে,গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ(টিআর) ও গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার(কাবিটা-কাবিখা)কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তার এর নামে বরাদ্দকৃত গত ৩ অর্থ বছরে ৫টি প্রকল্পের কাজ না করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,ইউনিয়নের ফেইচকার চর এলাকায় রহিমের ছ-মিল হতে সাহেব আলীর ভিটা পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামতের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।২০২৫-২৬ অর্থ বছরে একই রাস্তার নাম পাল্টিয়ে সংস্কারের জন্য ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। একই এলাকার জ্যেষ্ঠ মন্ডল এর দোকান হতে জাহাঙ্গীরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। একই রাস্তা সংস্কারের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও ৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। মগরাকুরা আকন্দ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কোন কাজ করা হয়নি। সরেজমিনে ইউনিয়নটির ৩ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ফেইচকার চর রহিমের ছ-মিল হতে সাহেব আলীর ভিটা পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও সেখানে কোন কাজ করা হয়নি। একই রাস্তার রহিমের ছ-মিলের রাস্তার অপজিটে থাকা লাল মিয়ার বাড়ি হতে সাহেব আলীর ভিটার অপজিটে থাকা আঙ্গুরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। একই এলাকায় নয়ারহাট ইউনিয়নের জোষ্টের দোকান হতে পশ্চিমে জাহাঙ্গীরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টি আর এর ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলে তা দিয়ে কোন কাজ করা হয়নি। একই রাস্তা সংস্কারের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কাবিখার ৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। মগড়াকুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিটা উঁচু করণ ও মাঠভরাট বাবদ ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলে সদস্যের স্ত্রীকে প্রকল্পের সেক্রেটারি বানিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। এ সময় স্থানীয় জিয়াউর রহমান জিয়া,শাহ আলম,সাহেব আলী,আব্দুল আজিজ মোল্লাহ,জহুরুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তার একই প্রকল্প বার বার দেখিয়ে রাস্তা মেরামতের নামে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অথচ স্থানীয় রাস্তা গুলি মানুষ চলাচলের অনুপযোগী রয়ে গেছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আব্দুল সাত্তার জানান,রাস্তার এগুলির কাজ আমি করেছি। মগড়াকুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরাদ্দ থেকে তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমাকে ৩০ট্রাক মাটি কাটতে বলেছিলেন। সেখানে আমি ৫৯ট্রাক মাটি কাটায় আমাকে বকাঝকা করে কম বিল দিয়েছেন। এতে আমার পকেট থেকে সাড়ে ১২হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সোহেল রহমান জানান,আমি এখানে যোগদান করার পর একটি কাজ দেয়া হয়েছে,যার কাজ বুঝিয়ে নিয়ে বিল দিয়েছি।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন,আমাদের কাছে আবেদন দিয়েছে। তদন্ত করে দেখা হবে বক্তব্যের সত্যতা আছে কি নাই।