বাগেরহাটের শরণখোলায় সোনালী ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন।নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে এখন চারদিক মুখরিত। সুপার বাম্পার ফলনে কৃষকদের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। কৃষকরা ধান কাটা মারাই এবং গোলায় তুলতে শুরু করেছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা নতুন জাতের ধান প্রযুক্তি সম্প্রসারণ সেচ ব্যবস্থার উন্নতি ও লবনাক্ততা সহনশীল স্বল্প জীবনকালীন বিভিন্ন ফসলের জাতের ধান চাষাবাদ করায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে সুপার বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মোস্তফা মসুল আলম জানায়,এবছর উপজেলায় প্রায় ৭০ হাজার বিঘা জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। ধানের মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল বিনা ৭ ও ১৭। বিআর ১১,২২,২৩ ও ব্রি ধান ৩৯, ৪৯ , ৭১, ৭৫, ৮৭, ৯৩, ১০৩।স্থানীয় দুতকলম, সাদা মোটা লাল মোটাসহ বিভিন্ন জাতের ধান স্বল্পকালীন জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।চাষীদের উৎসাহিত করতে ৩৫টি প্রদর্শনী ও প্রায় ৫৫০জন চাষীকে সরকারি প্রণোদনা হিসেবে ৮৭, ৭৫, ৯৩, ১০৩ জাতের বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে।মাঠে পাকা ধান কাটা শুরু করেছে কৃষক শ্রমিকরা । চলছে ধান কাটার মহা উৎসব ও ঘরে ঘরে নবান্নের উৎসব।
উপজেলার দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের আদর্শ চাষি নীরব হালদার জানায় তিনি ২০ বিঘা জমি চাষ করেছেন। প্রতিবিঘায় ৩৩ থেকে ৩৫ মন ধান হবে আশা করা যায়।২/৩ দিন পরে ধান কাটা শুরু করব। গত বছর দুই বিঘা জমিতে ৪৯ জাতের ধান চাষ করে ৬৭ মন ধান পেয়েছি।এ বছর আরো বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চাষাবাদ করায় এই সফলতা অর্জন করেছি। উত্তর কদমতলা গ্রামের সুলতান হাওলাদার, ঝিলবুনিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী খান,বকুলতলা গ্রামের আসাদুল জানায় তাদের এলাকায়ও বাম্পার ফলন হয়েছে। যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।উপজেলার খোন্তাকাটা,সাউথখালী,ধানসাগর ও রায়েন্দা ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ঘুরে বাম্পার ফলনের চিত্র দেখা গেছে।
পার্শ্ববর্তী মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বারৈখালী এলাকার থেকে আসা ধানকাটা গ্রুপের সর্দার মধু মিয়া বলেন ধান কাটতে অনেক ভালো লাগে। গত বছরের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। গত বছর ধান কাটতে এসে আমরা এক একজন শ্রমিক ১৫ মন করে পেয়েছি। এবার বেশি ধান পাবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার দেবব্রত সরকার এ প্রতিনিধিকে বলেন চলতি আমন মৌসুমে বাম্পার ফলনের লক্ষ্য নিয়ে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করায় কৃষকরা আগের চেয়ে অনেক দক্ষ হয়েছে।তাদের সরকারি ভাবে প্রদর্শনী প্রণোদনা হিসেবে বীজও সার দিয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাছাড়া নতুন জাত, প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, সেচ ব্যবস্থার উন্নতি, লবণাক্মতা সহনশীল জাত, স্বল্প জীবনকালীন ধান সহ বিভিন্ন ফসলের জাত চাষাবাদ করায় সঠিক সময় ও পদ্ধতিতে কৃষকরা সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি বিভাগ সুপার বাম্পার ফলনের টার্গেট নিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ও পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য কৃষকদের নানাভাবে সচেতন মূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন ।কৃষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও পরিশ্রমের ফলে সুপার বাম্পার ফলন হয়েছে।রবি মৌসুমে দ্বি ফসলি জমির পরিমাণ বেড়েছে।চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আর্জিতের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি।