সুন্দরগঞ্জে ৮০ হাসকিং চাতাল বন্ধ

এফএনএস (মোঃ ইমদাদুল হক; সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা) : | প্রকাশ: ৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম
সুন্দরগঞ্জে ৮০ হাসকিং চাতাল বন্ধ

অটো রাইস মিল চালু, মূলধনের অভাব, শ্রমিক সংকট, বরাদ্দ বিভাজনে খাদ্য গুদামের অনিয়মসহ নানাবিধ কারনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় একটি অটো মিলসহ ১২০টি হাসকিং চাতালের মধ্যে ৮০টি চাতাল বন্ধ রয়েছে।  উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে গত ১৭ নভেম্বর হতে আগামি ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সরকারি ভাবে চালের কেজি ৪৭ টাকা এবং ধান ৩৩ টাকা নির্ধারন করে উপজেলার সুন্দরগঞ্জ ও বামনডাঙ্গা খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহের লক্ষামাত্রা নির্ধারন করা হয় ১ হাজার ১৩ মেট্রিক টন এবং ধান ১ হাজার ১৮ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ২৭০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হলেও এক কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি। অটো রাইস মিল চালু এবং মুলধনের অভাবে হাসকিং চাতাল ব্যবসা এখন বন্ধের পথে দাবি করেন উপজেলা চাতাল মালিক সমিতির সভাপতি শাহাদৎ হোসেন আনন্দ। তার ভাষ্য সরকার অটো রাইস মিল মালিকদের বরাদ্দ দিচ্ছেন। সে কারনে হাসকিং চাতাল ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত হচ্ছে। বরাদ্দ না পাওয়ায় দিন দিন ব্যাংকে ঋনের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় অনেক চাতাল ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন । এ বৈষম্যের কারনে ব্যবসায়ীরা চাতাল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের হক চাল এবং নাজমা চাল কলের মালিক শামসুল হক বলেন, দীর্ঘ সাত বছর ধরে তিনি কোন বরাদ্দ পান না। ব্যবসা না থাকায় ব্যাংকে তার ঋনের পরিমান দিন দিন বাড়তে থাকে। সে কারনে তিনি চাতাল বন্ধ করে দিয়েছেন। সব জায়গায় এখন সিন্ডিকেট। হাসকিং চাতাল মালিকরা আর বরাদ্দ পাচ্ছেন না। এছাড়া পুঁজি এবং শ্রমিক সংকটের কারনও রয়েছে। একই দাবি উল্লেখ করে উপজেলার শান্তিরাম ইউনিয়নের চাতাল মালিক নুরুল হক সরকার বলেন, ধান ও চালের বিল করতে গিয়ে ডিসি ফুড অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা খাদ্যগুদামে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়। যার কারনে অনেকে চাতাল ব্যবসা হতে মুখ ফিরে নিয়েছেন। তিন বছর ধরে চাতালের কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছেন চাতাল শ্রমিক হেলেনা বেগম। তিনি বলেন, মালিকের ব্যবসা না থাকায় সপ্তাহে ৪-৫দিন কাজ বন্ধ থাকে। তা দিয়ে সংসার চলে না, সে কারনে চাতালের কাজ ছেড়ে দিয়ে রাজ মিন্ত্রীর জোগালির কাজ করছি। চাতাল ব্যবসা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক চাতাল ব্যবসায়ীর সিসি ঋন এখন বন্ধ রয়েছে বলেন সোনালী ব্যাংক লিমিটেড সুন্দরগঞ্জ শাখার ম্যানেজার আব্দুল হাদী। তিনি বলেন অনেক সিসি লোন গ্রাহক দীর্ঘদিন হতে লেনদেন না করায় তাদের ঋন খেলাপি হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে নোটিশ দেয়া হয়েছে। অটো রাইস মিল হোপ-এ্যাগ্রো লিমিটেডের পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, হাসকিং চাল কল বা চাতাল মালিকরা এখন ধান ও চাল খাদ্য গুদামে দিতে পারে না। সে কারণে সরকার অটো রাইস মিলের মাধ্যমে ধান ও চাল সংগ্রহ করে থাকেন। হাসকিং চাতাল মালিকরা এখন পুঁজির অভাবে ব্যবসা করতে পারছেন না। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাবিবুর রহমান জানান, সরকার কৃষকদের মাধ্যমে ধান নেয়ার কথা বললেও কৃষকরা যথা নিয়মে খাদ্য গুদামে ধান দিতে পারেন না। সে কারনে অটো মিলের মাধ্যমে চাল ও ধান সংগ্রহ করতে হচ্ছে। উপজেলার ১২০টি চাল কল বা চাতালের মধ্যে এখন ৮০টি বন্ধ রয়েছে।  

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে