সিলেট নগরীর সাগরদীঘিরপাড় এলাকায় সাইবার অপরাধসংক্রান্ত একটি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে আটক করতে গিয়ে সিআইডির উপপরিদর্শক মো. খোরশেদ আলম আহত হয়েছেন। সোমবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সিআইডির যৌথ অভিযানে ঘটনাটির প্রধান সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মামলার ওয়ারেন্ট বাস্তবায়নে সাদাপোশাকে অভিযান পরিচালনা করছিলেন সিআইডির সদস্যরা। ওই সময় লক্ষ্য ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টা করেন। তাকে আটক করতে এগিয়ে গেলে তিনি পকেট থেকে ধারালো ছুরি বের করে উপপরিদর্শক খোরশেদ আলমকে আঘাত করেন। পরে তিনি দৌড়ে পালিয়ে মোটরসাইকেলে উঠে এলাকা ত্যাগ করেন।
আহত কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সিআইডির একাধিক দল অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার ভোরে এয়ারপোর্ট থানার মজুমদারী এলাকার একটি মেস থেকে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। গ্রেপ্তার রহিম উদ্দিন রাজু (৩৩) সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার পশ্চিম কোনাগ্রামের রফিক উদ্দিনের ছেলে। তিনি সিলেট নগরীর শাপলাবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
অভিযানকারীরা জানান, রাজুর দেহ তল্লাশিতে একটি ভিজিটিং কার্ড পাওয়া যায়, যেখানে নিজেকে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে পরিচয় দেওয়া ছিল। কার্ডটির সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সিআইডির ডিআইজি ড. মো. আল মামুনুর আনসারী ব্রিফিংয়ে বলেন, গ্রেপ্তার রাজুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মোট ছয়টি মামলা রয়েছে-এর মধ্যে কোতোয়ালী থানায় একাধিক মামলা এবং শাহপরাণ থানায় চুরি ও মারধরের মামলা অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া পূর্বের এক মামলার বাদীর ছবি সম্পাদনা করে অসদুপায় অবলম্বন ও হয়রানির অভিযোগেও তিনি অভিযুক্ত।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের ওপর হামলা কোনোরকমেই সহ্য করা হবে না। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, অভিযুক্ত রাজু মোটরসাইকেলে ওঠার মুহূর্তে সিআইডির সদস্যরা তাকে আটকাতে গেলে তিনি ছুরি বের করে উপপরিদর্শক খোরশেদ আলমকে আঘাত করেন এবং দ্রুত পালিয়ে যান। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।