সাধারণ মানুষ ও যান চলাচলে দূর্ভোগ

সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ দোকানপাট

এফএনএস (ফজলে রাব্বী সোহেল; সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ) : | প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:৩১ পিএম
সোনারগাঁয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশে অবৈধ দোকানপাট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা টোলপ্লাজা, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও কাঁচপুর সহ বিভিন্ন পয়েন্টে প্রভাবশালীদের সহায়তায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জায়গা দখল করে অবৈধ দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। এতে মহাসড়কে দূরপাল্লার দ্রুতগতির যান চলাচলে যানজট সৃষ্টি সহ পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান,  ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার মেঘনা টোলপ্লাজা থেকে শুরু করে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও কাঁচপুর সহ প্রায় সবগুলো পয়েন্টে হকাররা অবৈধ ভাবে ফুটপাত ও ফুটওভারব্রিজ দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিন গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা ও বেটারী চালীত অটোরিকশা আর মানুষের চাপে ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে এবং পথচারীদের চলাচলের সুবিধার জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কিছুদিন পূর্বে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নোটিশবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়ার পরও প্রশাসনের চোখের সামনে প্রভাবশালীদের সহায়তায় কিছুদিন পর তা আবার দখল হয়ে যায়। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী সহ সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য মহাসড়কের দুই পাশে চলাচলের পথ এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভারব্রিজ নির্মিত হলেও বর্তমানে তার সবই হকারদের দখলে চলেগেছে। সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে দোকানপাট তৈরি হওয়ার কারণে পথচারীদের চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে নিরাপদে রাস্তা পারাপারে সমস্যা হচ্ছে। দখলদাররা অবৈধ দোকানপাট তৈরি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার এক বাসিন্দা আঃ জব্বার বলেন, হকাররা সড়কের বড় একটি অংশ দখল করে রেখেছে। ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি আমাদের মতো সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রভাবশালী চক্র সরকারি জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করছে। বারবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও স্থায়ীভাবে এ অবৈধ দখল ঠেকানো সম্ভব হচ্ছেনা। সরকার বদলায়, জনপ্রতিনিধি বদলায় কিন্তু সহাসড়কের দৃশ্য বদলায় না।

কাঁচপুর এলাকার একজন ব্যবসায়ী রোস্তম আলী আক্ষেপ করে বলেন, আগে এক গ্রুপ টাকা তুলত, এখন আরেক গ্রুপ। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ একই। নামমাত্র উচ্ছেদ হয়, পরদিন আবার সব দোকান আগের মতো উঠে যায়।

সম্প্রতি সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করলেও কয়েক দিনের মধ্যে আবার সব জায়গা দখল হয়ে গেছে।

চৈতী গার্মেন্টস কোম্পানির একজন শ্রমজীবী নারী বলেন, রাতে এসব পথ দিয়ে হাঁটা যায় না। ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে হয়। দোকানের আড়ালে কোনটা হকার, কোনটা ছিনতাইকারী বোঝা যায় না।

এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম সাংবাদিকদের জানান, উচ্ছেদ অভিযান আসলে একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা নিয়মিত ভাঙছি, কিন্তু কিছু স্থাপনা অল্প সময়ের মধ্যেই আবার গড়ে ওঠছে। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। খুব শিগগিরই আবারও অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি হচ্ছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে