জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল সরকারি পাইলট মডেল স্কুল এন্ড কলেজে পরীক্ষার ফি পরিশোধ করতে না পারায় সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাসিবুল বাসার আব্দুল্লাহ (১৩) ক্ষেতলাল পৌর এলাকার মালীপাড়া মহল্লার দুদু মিয়ার নাতি। তার মা লাভলী আক্তার বগুড়ার এরুলিয়া এলাকায় বিয়ে হলেও দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে বর্তমানে বাবার বাড়িতেই বসবাস করছেন। দিনমজুর স্বামীর দারিদ্র্যতা ও অনিয়মিত আয়ের কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের বেতন, সেশন ফি ও পাঠ্যসহায়ক বইয়ের খরচ জোগাড় করতে না পারায় শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ব্যাহত হয়।
জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় হাসিবুল নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকতে না পারলেও পড়াশোনার আগ্রহ বিবেচনায় নিয়ে তার মা পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন হিসাব সহকারীর কাছ থেকে সেশন ফি ও পরীক্ষার ফি বাবদ ১ হাজার ৬২০ টাকা পরিশোধের কথা জানানো হয় এবং টাকা না দিলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে তার মা অর্থের সংস্থান করতে না পেরে ছেলেকে নানির কাছে রেখে চলে যায়।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীর নানি সুফিয়া বেগম এক হাজার টাকা জোগাড় করে পরীক্ষায় বসানোর অনুরোধ জানালেও তাতেও কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি হাসিবুল।
হাসিবুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তে চায়। কিন্তু এভাবে সপ্তম শ্রেণিতেই আটকে গেলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিলফিকার রহমান বলেন, বিষয়টি তিনি অবগত ছিলেন না। পরীক্ষার জন্য আলাদা কমিটি ছিল। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য ফি মওকুফের তহবিল রয়েছে। পরিবার আবেদন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হতো। এখন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীর পরীক্ষার সুযোগ ও পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে।
এদিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিবার যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।