রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারের হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের মেয়ে খাদিজা ইয়াসমিন বিথীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামানের আদালত মঙ্গলবার তার কারাগারে থাকার নির্দেশ দেন। তবে মামলার মূল নথি না থাকার কারণে তার সাত দিনের রিমান্ডের শুনানি বৃহস্পতিবার ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার কুমিল্লা জেলা কারাগারের সামনে থেকে গ্রেপ্তার হওয়া খাদিজাকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম রিমান্ডের আবেদন করেন। তিনি বলেন, “আরিফের মৃত্যুতে খাদিজা জড়িত ছিল বলে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।”
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত ১৯ এপ্রিল রাতে হাতিরঝিল থানার নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’র সামনে আরিফকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। আরিফ সিকদার ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহ-ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনকে আসামি করেন।
রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং তার মেয়ে খাদিজা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে খাদিজা তার পিতাসহ মগবাজার ও হাতিরঝিল এলাকায় আরিফকে প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করেছিলেন। “তারই প্রেক্ষিতে সুব্রত বাইন ও আসামি খাদিজার প্রত্যক্ষ প্ররোচনা এবং পরিকল্পনায় আরিফকে হত্যা করা হয়,” আবেদনপত্রে বলা হয়েছে।
প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই আরিফ রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, ২৭ মে ভোরে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুষ্টিয়া থেকে সুব্রত বাইন ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ গ্রেপ্তার হন। এরপর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে সহযোগী শ্যুটার আরাফাত ও শরীফকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়।
২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে এবং তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। তারা সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করতো এবং খুন-ডাকাতির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতো। দেশে ফেরার পর ৫ আগস্টের পর তারা পুনরায় খুন ও চাঁদাবাজি শুরু করেন।