মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি (বিজিপি)'র শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি | প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৮:০০ পিএম
মহান বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে  বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি (বিজিপি)'র শ্রদ্ধা নিবেদন

মঙ্গলবার ( ১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০ ঘটিকায় মহান বিজয় দিবসে  বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি'র সভাপতি এম এ আলীম সরকার এর নেতৃত্বে জাতীয়  স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পার্টির নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক বিবৃতিতে এম এ আলীম সরকার বলেন, আজ মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করে দেয়। তখন থেকে আমাদের জাতি, রাষ্ট্র ও জনগণ স্বাধীনভাবে রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু নানা অশুভ শক্তি আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করে আসছে। এর ফলে আমাদের স্বাভাবিক অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে। গত ৫৪ বছরের মধ্যে  বাংলাদেশ আত্মগঠনের ধারায় এগোতে পারেনি। এই অবস্থার মধ্যে আজ আমাদের ৫৫তম স্বাধীনতা দিবস এসে গিয়েছে। যে বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, তাতে করে আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা চালাতে হবে। আমাদের রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা আছে, সে ব্যাপারটা নিয়ে গভীরভাবে অগ্রসর হতে হবে এবং নতুন কর্মপন্থা অবলম্বন করতে হবে। সেই নতুন লক্ষ্যে অগ্রসর হতে হলে আমাদের  চিন্তা-ভাবনা এবং কাজের ধরন বদলাতে হবে। উদ্দেশ্য নির্ণয়, সেই নতুন উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের নতুন সংগ্রাম আরম্ভ করতে হবে। রাজনীতির দিক দিয়ে বিচার করলে দেখা যাবে পৃথিবীর সব রাষ্ট্রই আজ ভুল পথ ধরে চলছে । এই ধারায় স্বল্প সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু ধারায় উত্তীর্ণ হওয়া যাবে না। তাই স্বাধীনতা দিবসে আমাদের উল্লোসিত হওয়ার কোনো কারণ নাই। এখন আমাদের দরকার আত্মজিজ্ঞাসা, আত্মসমালোচনা এবং  নতুন ধারা সংগ্রামের জন্য কর্মসূচি ও কর্মনীতি অবলম্বন করতে হবে। এখন আমাদের গতানুগতিক পথে না চলে আত্মগঠনে এবং আত্মউন্নয়নের জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা ও কর্মসূচি অবলম্বন করা দরকার। আমাদের আত্মসমালোচনা, আত্মশুদ্ধি ও নতুন কর্মসূচি অবলম্বন করে এগোতে হবে। আমাদেরকে অবলম্বন করতে হবে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার ও পরিচালনা করার নীতি। আমরা সংঘাত-সংঘর্ষ চাই না। বিবেক ও যুক্তি অবলম্বন করে নতুন কর্মসূচি ও কর্মনীতি অবলম্বন করতে হবে। লক্ষ্য ও কর্মপন্থা নির্ণয় করে কাজ করতে হবে। আমরা জনসাধারণকে জাগিয়ে তুলব এবং জনসাধারণের মন মানসিকতা বিবেচনা করে কাজ করতে হবে। বিপুল সম্ভাবনা আছে, সেই সম্ভাবনা কাজে লাগানোই আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ও চলমান বিশ্বব্যবস্থায় আমাদের করণীয় নির্ধারণ করে পরিচ্ছন্ন মত প্রকাশ করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে আমরা যে চিন্তা ও কর্মপন্থা ঘোষণা করব, তা পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের জনগনই গ্রহণ করবে। সর্বজনীন কল্যাণে এসব বিষয়ে আমাদের সর্বাঙ্গীন কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই। বিবেক-যুক্তি অবলম্বন করে আমরা যদি প্রচার কার্য চালাই, তাহলে পৃথিবীব্যাপী জনগণ জেগে উঠবে। জনগণকে জাগিয়ে তোলাই আমাদের প্রধান কাজ। রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং  বিশ্বব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করাই বর্তমান পর্যায়ে আমাদের লক্ষ্য। রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা এবং জনজীবনের কল্যাণের লক্ষ্য নতুনভাবে কার্যকারণ নির্ণয় করতে হবে। যে কার্যকারণের ধারা অবলম্বন করে কথিত লক্ষ্য নির্ণয় না করে যে আন্দোলন চালানো হয় তা পরিহার করে লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রাম অবশ্যই লাগবে। জনসাধারণকে না জাগিয়ে সর্বজনীন কল্যাণে কিছু  করা যাবে না। জনগণকে জাগিয়ে তোলাই আমাদের  সংগ্রামের প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্য। ঘুমন্ত জনগণকে জাগাতে হবে। আমাদের সাফল্য অর্জনের জন্য যা কিছু করা দরকার সবই আমাদের করতে হবে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এগোতে চাই। যদি কোনো মহল থেকে অশান্তি করতে চায়, আমাদের লক্ষ্যের বিপরীতে কাজ করতে চায় অবশ্যই আমরা তা মোকাবেলা করবো। রাজনীতিতে জনগণের বিকল্প এমন কোনো শক্তি নেই যা জনগণের সংগ্রামকে ব্যর্থ করতে পারে। পৃথিবীর সকল জাতিই এখন সুষ্ঠু রাজনীতির চিন্তা হারিয়ে ফেলছে। এক বৈরী বাস্তবতার মধ্যে আমাদের সংগ্রাম আরম্ভ করতে হবে। অবশ্যই আমাদের গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধী। জনগণ অগ্রসর হলে পৃথিবীর কোনো শক্তি আমাদেরকে ব্যর্থ করতে পারবে না। আজ দরকার পৃথিবীর দেশে দেশে নতুন সংগ্রামের চিন্তা ও চেষ্টা শুরু করা। জনগণের শক্তিকে মোকাবিলা কোনো অপশক্তি করতে পারবে না। বিজয়ের সেই নিশ্চয়তা অবলম্বন করে সেই কর্মসূচি নির্ধারণ করতে হবে। আজ বিজয়ের আনন্দ থেকে নতুন সংগ্রামের স্পৃহা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দেশ আজ কঠিন সংকটের মধ্যে আছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র  চলছে।  সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে, দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাবে। দেশে আজ কোনো রাজনীতি নেই। সবকিছু বিসর্জন দিয়ে শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রতিহিংসার রাজনীতি। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য সকল রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাই। বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি সর্বজনীন কল্যাণে সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রতিষ্টার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সংঘাত-সংঘর্ষ চাইনা। আমরা সর্বজনীন কল্যাণে শান্তি চাই। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে