বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশে সংঘটিত বিভিন্ন মব সন্ত্রাস পুরো জাতিকে বিভক্ত করেছে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডের মাধ্যমে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, হাদী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন এবং জনগণের কাছে পৌঁছেছিলেন। “নির্বাচন হবে এবং বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। হাদীর হত্যাকারীদের বিচারের পাশাপাশি প্রতিটি মব সন্ত্রাসের ঘটনার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে,” তিনি বলেন। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর দেশের প্রথম দায়িত্ব হলো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং একটি স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলা।
তিনি আরও বলেন, “দেশের সংকটময় মুহূর্তকে কাজে লাগানোর জন্য যারা অপেক্ষা করে, তারা এই দেশের শত্রু। তারা সংকটকে পুঁজি করে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। আমি এই মব সন্ত্রাসের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” ফখরুল উল্লেখ করেছেন, শহীদ হাদীর মৃত্যুতে শোকাহত জাতি যখন তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করছে, তখন বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং বরেণ্য সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে দুটি গণমাধ্যমের অফিসে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, আজ সন্ধ্যা নাগাদ হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছাবে এবং পরে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ফয়সাল করিম মাসুদকে মূল হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তার সহযোগী আলমগীর শেখ মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন। সূত্র অনুযায়ী, এই দুজন ভারতে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব।
বিশেষজ্ঞরা মনে করান, “মব সন্ত্রাস জাতিকে ভাঙতে পারে, তাই ন্যায়বিচার ও আইনের প্রতি আস্থা বজায় রাখা জরুরি। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদই সমাজে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।