সুদানের আবেই এলাকায় সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য কর্পোরাল মাসুদ রানার মরদেহ নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।রোববার (২১ডিসেম্বর) দুপুর ৩টার সময় তাঁর লাশ উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়া পাড়া নিজ বাড়িতে পৌঁছে।
এর আগে দুপুর ২টা ২২ মিনিটে পরিবারের তিন সদস্যসহ তাঁর লাশ নিয়ে আকাশ পথে সেনাবাহিনী একটি হেলিকপ্টারে করে করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িবহর সহ সেখান থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁর বাড়িতে নেওয়া হয় মরদেহ।
মাসুদ রানার লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে পৌঁছা মাত্র সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা ও স্ত্রী কন্যা আত্মীয় স্বজন সহ এলাকাবাসী।
সকাল থেকেই মাসুদ রানাকে শেষবারের মতো দেখতে হাজারো মানুষের ভিড় জমতে থাকে তার বাড়িতে। এলাকা জুড়ে হৃদয়বিদারক কান্নায় বাতাস যেন ভারী হয়ে ওঠে।স্থানীয় স্কুল মাঠে গার্ড অফ অনার শেষে ৩টা ৫৫ মিনিটে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে ৪ টা ৩৫ মিনিটে সামরিক মর্যাদায় তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে শহিদ ৬ বাংলাদেশী সেনা সদস্যর লাশ নিয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্স এর একটি ফ্লাইট অবতরণ করে।
রোববার সকালে ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে মাসুদ রানার পরিবারের সদস্য সহ দুপুরে হেলিকপ্টারে যোগে নাটোরের লালপুর উপজেলা করিমপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে।
মাসুদ রানা লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সাহার মালিথার ছেলে। ৫ ভাই বোনের মধ্যে মাসুদ রানা সবার বড়। ২০০৬ সালে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি যশোর সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। গত ৭নভেম্বর তিনি জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে সুদানের আবেই যোগদান করেন। শান্তিরক্ষা মিশনে যোগদানের ১মাস ৭দিন পর সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় তিনি সহ ৬জন বাংলাদেশী সেনা সদস্য নিহত হয় এবং ৯জন গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জানান, মাসুদ রানা ছিলেন আমাদের এলাকার গর্ব। তার মৃত্যুতে এলাকাবাসী শোকাহত।