সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

হাদি হত্যার মূলহোতা খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
হাদি হত্যার মূলহোতা খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের অবস্থান নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এখনও সঠিক তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ে কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, “যদি এখন তাদের অবস্থান জানতাম, ধরেই ফেলতাম। তারা দেশেও থাকতে পারে, বাইরে থেকেও থাকতে পারে। তবে সঠিক স্থান জানা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা অবিলম্বে ধরত।” তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা হিসেবে যে ফয়সালকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার খোঁজে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ফয়সাল করিমের স্ত্রী, মা, বাবা, শ্যালকসহ একাধিক সহযোগী রয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, ২টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগজিন, ৪১ রাউন্ড গোলাবারুদ ও ১টি খেলনা পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে।

অপরাধ ও গ্রেপ্তারের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। গির্জা ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এবং গুলশান, বনানীসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বিশেষ নজরে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, “বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো ধরনের আতশবাজি করা যাবে না এবং রাস্তা অবরোধ করে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন নিষিদ্ধ।”

এছাড়া নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা রাজনীতিবিদসহ ২০ জনকে গানম্যান দেওয়া হয়েছে। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সম্পাদকদের বাসভবন ও অফিসেও বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, “হিটলিস্টে বা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, অনেকে চাইছেননি, তবুও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

ডেভিল হান্ট ফেইজ–২ অভিযান ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা ও ওয়ারেন্টভিত্তিক গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫০৫। অভিযান চলাকালে উদ্ধার হয়েছে ৫৬টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪৩৭ রাউন্ড গুলি, ১৩৭ রাউন্ড কার্তুজ, ৬২টি দেশীয় অস্ত্র, গ্রেনেড, মর্টার গোলা, গান পাউডার, আতশবাজি ও বোমা তৈরির উপকরণ।

উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সহিংসতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও উসকানিমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।”

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে