আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে লালমনিরহাট। সকাল থেকে লালমনিরহাট থেকে ঢাকাসহ সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।
তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনের দাবিতে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনে রেলপথ অবরোধ করেছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনতা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানকে বরণ করতে লালমনিরহাট থেকে কয়েক হাজার মানুষ ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। যাতায়াতের সুবিধার্থে ভাড়ার বিনিময়ে বিশেষ ট্রেন বা অতিরিক্ত কোচের আবেদন জানিয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জেলা বিএনপি। অভিযোগ উঠেছে, শুরুতে রেল কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করলেও গত ২২ ডিসেম্বর (রোববার) রাত ১২টার দিকে শেষ মুহূর্তে কারিগরি কারণ দেখিয়ে বিশেষ ট্রেন দিতে অস্বীকৃতি জানায় বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) আবু হেনা মোস্তফা আলম।
রেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফুঁসে ওঠে আন্দোলনকারীরা। তারা লালমনিরহাট স্টেশনের প্রধান রেলপথে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে সকাল ১০টায় 'লালমনি এক্সপ্রেস' ট্রনটি ঢাকা অভিমুখে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এ রিপোট লেখা পর্যন্ত স্টেশন ছেড়ে যেতে পারেনি। এ ছাড়াও লালমনিরহাট থেকে রংপুর পার্বতীপুর কুড়িগ্রাম সহ সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী, কুড়িগ্রাম এবং পার্বতীপুর হয়ে সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্টেশনে আটকা পড়ে নারী ও শিশুসহ শত শত সাধারণ যাত্রী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
রেলওয়ে বিভাগের দাবি, বর্তমানে ইঞ্জিন ও কোচের তীব্র সংকট রয়েছে। এ কারণে পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল ঠিক রেখে অতিরিক্ত বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, এটি সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ। ভাড়ার বিনিময়ে ট্রেন চাওয়া সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তারা ঘোষণা দিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, লালমনিরহাট স্টেশনে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেলা ৩টা পেরিয়ে গেলেও 'লালমনি এক্সপ্রেস' সহ সকল ট্রেন লালমনিরহাট রেলস্টেশনে আটকা পড়ে আছে।