পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে চাকরি না পেয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো.মোস্তাফিজুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য মো. আব্দুল মান্নানের কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত বছর ১৭ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন চাকরিপ্রার্থী মোঃ মাহবুব এলাহী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কে নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই (নিরস্র) সঞ্জীব কুমার সরকার তদন্তের সত্যতা পেয়েছেন বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে আপোষ মীমাংসার শর্তে জামিন গ্রহণ করেন। কিন্তু আসামিরা পাওনা ১০ লক্ষ টাকা দিবো দেই দিচ্ছি বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে। পরে পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ আগাম জামিন চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ আলী জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা অধ্যক্ষ প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল,অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী, নৈশ প্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য ১৮ আগস্ট ২০২৩ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে যথা নিয়মে আবেদন করেন মো. মাহবুব ইলাহী। পরে মাহবুবের কাছ থেকে তার পিতা মো. আব্দুল হাইর উপস্থিতিতে চাকরি দেওয়ার শর্তে মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান ৮ লাখ টাকা ও শিক্ষানুরাগী আব্দুল মান্নানকে ২ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। পরবর্তীতে ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেন। কিন্তু সেখানে মাদ্রাসা শিক্ষানুরাগী সদস্য আব্দুল মান্নান তার ছেলে মো: ফয়সাল শরীফকে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়। ওই পদেও মাহাবুব ইলাহীকে চাকরি দেওয়া হয়নি। পরে ঘুষ নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য করার অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি হাবিবুর রহমান নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেন। শুধু অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে নয়। প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী, নৈশ প্রহরী ও আয়া পদেও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ এনে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৬ জন প্রার্থী। এ বিষয়ে মাহবুব এলাহী অভিযোগ করে বলেন অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে চাকরি পাওয়ার জন্য জমি বিক্রি,ব্যাংক লোন ও বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে সুদে টাকা এনে পর্যায়ক্রমে অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষানুরাগী মান্নানের কাছে ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করি। কিন্তু আমার চাকরি তো পেলামই না। উল্টো পাওনা টাকা চাইতেই বিভিন্ন মামলা, গুম খুনের হুমকি দিচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরিবার নিয়ে দুবেলা খাবার জোগাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে সুদের জন্য টাকা পাওনাদারেরা তাগাদা দিচ্ছে। এখন আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন পথ নাই।