শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সুদের ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে দেশীয় অস্ত্রের হামলায় দেলোয়ার হোসেন (৪০) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত দেলোয়ার দক্ষিণ কালিনগর গ্রামের মৃত তোরাব আলীর ছেলে। এই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ময়দান আলী (৪৮) ও খুশি বেগম (৩৫) নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে শেরপুর আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ কালিনগর এলাকায় মর্মান্তিক এই হত্যা কাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নালিতাবাড়ী পৌর শহরের অদূরে দক্ষিণ কালিনগর দুধুয়ারখাল ব্রিজপাড় এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের তিন ছেলে শেখ ফরিদ, আলম মিয়া ও রবিউলের সাথে রিকশাচালক তারা মিয়ার সুদের ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে মঙ্গলবার রাতে কালিনগর ব্রিজ পাড়ে দেলোয়ারের ছেলের দোকানের সামনে তারা মিয়ার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শেখ ফরিদ, আলম মিয়া ও রবিউল ইসলাম দেশীয় অস্ত্র হামলা চালালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এ সময় তারা মিয়ার মামাতো ভাই দেলোয়ার হোসেন ঝগড়া থামাতে এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে দেলোয়ারসহ আরও কয়েকজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এদিকে, গুরতর আহত দেলোয়ারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়মনসিংহ নেওয়ার পথে দেলোয়ার মারা যান। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ ফরিদের স্ত্রী খুশি বেগম ও তার মামা ময়দান আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ তাদেরকে শেরপুর আদালতে প্রেরণ করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা জানান, ‘সুদের পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব প্রতিপক্ষের হামলায় দেলোয়ার হোসেন নামে একজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বুলু মিয়া বাদী হয়ে ২০ জনকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে বুধবার বিকেলে তাদেরকে শেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।’