এক বিষয়ে ফেল করায় রাজশাহী কৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট)
এক শিক্ষার্থীর লাশ
ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার লাশ ঝুলছিল। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ এবং রুয়েট কর্তৃপক্ষ। ময়নাতদন্তের জন্য
লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর নাম
মেহেদী হাসান (২২)। তিনি রুয়েটের আরবান প্ল্যানিং (ইউআরপি) বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী
ছিলেন। তার বাবার নাম নূর ইসলাম। বাড়ি রংপুর শহরের কোতোয়ালি থানার বনানীপাড়া মহল্লায়। মেহেদী হাসান থাকতেন রাজশাহী নগরীর ফুদকিপাড়া মহল্লার এবেলা ছাত্রাবাসে। শুক্রবার
দিবাগত মধ্যরাতে ছাত্রাবাসটির নবম
তলার একটি কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, রাত ১১টার দিকে তারা খবর পান। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য
লাশটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রাতেই পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে রাজশাহী এসেছেন। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে
হচ্ছে মেহেদী হাসান আত্মহত্যা করেছেন। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন এবং আরও তথ্য সংগ্রহের পর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে। পুলিশ তদন্ত করছে। রুয়েটের ছাত্র উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, দুই সিটের একটি রুমে থাকতেন মেহেদী। তার রুমমেট নেই। রুমে একাই ছিলেন মেহেদী। ছাত্রাবাসের অন্য
শিক্ষার্থীরা দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে মেহেদীর মা তাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না। এভাবে সারাদিন গড়িয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে তিনি ছাত্রাবাসের অন্য
এক ছাত্রকে ফোন করে মেহেদী আছেন কি না তা দেখতে বলেন। তখন শিক্ষার্থীরা দেখেন
যে মেহেদীর রুম ভেতর থেকে লাগানো। এরপর তারা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মেহেদীর লাশ দেখেন। ছাত্র উপদেষ্টা জানান, মেহেদীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা স্নাতক
শেষ করে বেরিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এক বিষয়ে ফেল থাকার কারণে মেহেদী যেতে পারেননি। এটা নিয়ে তার ডিপ্রেশন ছিল। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এই ডিপ্রেশনের কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রায়ই রুয়েটের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার
ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন জানিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা বলেন, এটা আসলে চিন্তার বিষয়। কয়েকজন ছাত্রের আত্মহত্যার পর আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান
বিভাগের একজন অধ্যাপককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
দিয়েছি। সপ্তাহে তিন দিন তিনি রুয়েটে আসেন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া শিক্ষার্থীরা তাঁর
কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।