চলতি মৌসুমে রাজশাহীর তানোরে ক্লোডস্টোরে (হিমাগার) আলু সংরক্ষণ ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুন করায় চাষিদের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (১২ জানুয়ারী) রোববার বিকেলে তানোর সদরের গোল্লাপাড়া মাঠে আলু চাষিদের উদ্যোগে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় তানোর পৌর বিএনপির আহবায়ক একরাম আলী মোল্লার সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক এম রায়হান আলী। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান। এতে উপস্থিত বক্তব্য রাখেন আলু চাষি আব্দুল মতিন, আহসান হাবিব, জালাল উদ্দিন ও সালাউদ্দিন হাজী।
এছাড়াও মোহনপুর উপজেলার আলুচাষি মনিরুল ইসলাম, নাজিম হোসেন, মৌগাছির ইউনুস আলী, কেশরহাটের তোফায়েল আহম্মেদ, দৈল্যাবাড়ির মহসিন আলী, বায়ার আলু চাষি আনারুল ইসলাম ও বড়গাছীর ইমরান আলী ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন। এতে বিপুল সংখ্যক আলু চাষি আর সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, চলতি বছর রাজশাহীর তানোরে ১৩ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষবাদ করা হয়েছে। আর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১২ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৬৮ হেক্টর বেশি জমিতে আলুর চাষাবাদ করেছেন চাষিরা। এবারে এতোসব আলুর ক্ষেত থেকে প্রায় ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬০ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস। এসব আলুর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ তানোরে ৬টি, মোহনপুরে ৭টি হিমাগার ছাড়াও পুরো রাজশাহীতে ৩৬টি হিমাগারে আলু রাখেন ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। এই মজুদ করা আলু সারা বছর বাজারে বিক্রি করা হয়।
কৃষকদের দাবি, গত মৌসুমে হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতি কেজি দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ টাকা। এবারে দ্বিগুণ বাড়িয়ে তা ৮ টাকা কেজি করা হয়েছে। হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা হওয়ায় আলুর দাম মৌসুমের শেষে অতিরিক্ত বাড়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তা ও চাষিরা। এদিকে বিদ্যুতের দাম না বাড়ার পরও প্রতি কেজি আলুতে সংরক্ষণ চার্জ ৪ টাকা বাড়ানোকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এবিষয়ে ক্লোড স্টোর কর্তৃপক্ষ বলেছেন, আলু রাখার দর নির্ধারণ করে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন। দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে তারা বলেন, লেবার খরচ ও বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে, প্রকৃত কৃষক যারা তাদের কাছ থেকে টাকা কম নেওয়া হয়।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খায়রুল ইসলাম বলেন, প্রতি কেজিতে দ্বিগন টাকা ভাড়া বাড়লে এই চাপ ভোক্তা পর্যায়ে পড়বে। এই সুযোগে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীরা আলুর দাম বাড়িয়ে দিবে। এবার বিদ্যুতের দাম বাড়েনি, অন্য কোন সমস্যাও নেই তারপরও হিমাগারে ভাড়া দ্বিগুন বাড়ানো ব্যাপারে উভয়পক্ষকে নিয়ে সমাধানে বসা হবে বলে জানান ইউএনও। ই/তা