চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের নারায়ণপুরের সারপারের বড় পাড়া এলাকায় লাকী আক্তার (৩৫) নামে এক নারীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার সাবেক স্বামী মোস্তফার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী পুলিশের। যদিও ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামীকে লাশের উপরে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
জানা যায়, নিহত লাকী আক্তার সারপার কালা কাজী প্রধানীয়া বাড়ির মৃত নজরুল প্রধান এবং মৃত কমলা বেগমের একমাত্র মেয়ে। সে সারপার বড় পাড়া ঠাকুর বাড়ি নামে পরিচিত মোশাররফ প্রধান এর বাড়িতে থাকতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এবং নিহতের খালা হোসনেয়ারা বেগম জানান, গত ৭/৮ বছর পূর্বে মোস্তফার সাথে নিহত লাকী আক্তারের প্রেম করে বিয়ে হয় এবং সেই সংসারের ৬ বছরের জুনায়েদ নামে একটি ছেলে বাচ্চাও রয়েছে। নিহত লাকী আক্তার এবং তার ছেলে জুনায়েদ(৬) গত ২০/২৫ দিন পূর্বথেকে মোশাররফ প্রধান এর পরিত্যক্ত বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
জানা যায়, এই মোস্তফার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে আরো দুইটি বিয়ে করেছিলেন লাকী। যদিও বর্তমানে তার কোন স্বামী নেই।
এলাকাবাসী বলেন, সকালে ৭ টার দিকে লাকীর সাবেক স্বামী মোস্তফা তার সন্তান জুনায়েদকে নিতে আসেন এবং ছেলে জুনায়েদকে ২০০ টাকা দিয়ে বলেন তোমাকে নিতে এসেছি। যদিও ছেলে জুনায়েদ বাবার সাথে যেতে অস্বীকৃতি জানায় এবং টাকাটা ছিড়ে ফেলে। পরবর্তীতে লাকী আক্তার এবং তার সাবেক স্বামী মোস্তফা এর মধ্যে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হলে স্বামী তার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে লাকীর গলায় ছুরিকাঘাত করে। পরে লাকী আক্তার দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আপা আমাকে বাঁচান বলে উঠোনে গিয়ে পড়ে যায় এবং খুনি স্বামী তার হাতের রগ কেটে সবার সামনেই মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এলাকাবাসী আরও বলেন, লাকীর চিৎকার শুনে পাড়া প্রতিবেশিরা জড়ো হলে মোস্তফা নিজেই নিজের পেটে ছুরিকাঘাত করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং লাকী আক্তার ততক্ষণে মারা যান। এরপর মোস্তফা নিহত লাকী আক্তারের উপরে অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়েন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ থানার ওসি সালেহ আহমেদ বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে নিহত লাকির ছেলে জুনায়েদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনি এবং লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাই। আর আহত স্বামীকে হসপিটাল পাঠিয়েছি।
এদিকে এ ঘটনায় এলাকাবাসী এবং নিহিত লাকী আক্তারের আত্মীয় স্বজনরা ঘাতক স্বামী মোস্তফার ফাঁসি দাবি করেন।