রাজশাহীর বাগমারায় এক ব্যবসায়ীর পুকুর থেকে প্রায় নয়লাখ টাকার লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাহারাদারকে বেঁধে রেখে মাছ লুট করে নিয়ে যায়। মাছ ধরার উপকরণ ফেলে পালিয়ে যায়। সময় লোকজন ধাওয়া করে কয়েকজন ভাড়াটে জেলেকে আটক করলেও তাঁদের থানায় দেওয়া সম্ভব হয়নি।
পুকুর মালিকের অভিযোগ, স্থানীয় এক শিক্ষকের নেতৃত্বে মাছ লুট করা হয়। পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করা হয়।
উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক জানান, তিনি ইসলাবাড়ি গ্রামের ৭০ জনের কাছ থেকে ২০ বিঘা জমি ১০ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে সেখানে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করে আসছিলেন। পুকুরে রুই, কাতলসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় ১৫-১৬ লাখ টাকার মাছ ছিল।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কয়েকটি ভটভটি নিয়ে ২৫-২৬ জন লোক পুকুরে আসেন। তাঁরা পুকুরের ধারে থাকা বিদ্যুতের আলো নিভিয়ে ফেলেন। পাহারাদা রহিদুল ইসলামে রশি দিয়ে হাত -পা বেঁধে ফেলেন। পরে পুকুরে জাল নামিয়ে মাছ লুট করে ভটভটিতে করে নিয়ে যান। এসময় পাহারাদারের চিৎকার এবং ভটভটির শব্দে কিছু লোকজন টের পান। লোকজন পুকুর মালিককে মুঠোফোনে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহযোগিতা চান। জাতীয় জরুরি সেবা থেকে স্থানীয় থানার সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও ঘটনাস্থলে যায়নি বলে অভিযোগ করা হয়।
পরে লোকজন ধাওয়া করে কয়েকজন জেলেকে ধরে ফেলেন। তাঁরা জানান, ওই গ্রামের জনৈক ওমর আলী ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলেন মাছ ধরার জন্য। তাঁরা পেশাদার জেলে বলে জানান।
পরে তাঁদের জবানবন্দি মুঠোফোনে ধারণ করে দেওয়া হয়। পরে থানা পুলিশের পরামর্শে আজ শুক্রবার সকালে জেলেদের ফেলে যাওয়া একটি অটোভ্যান, জালসহ মাছ ধরার উপকরণ জব্দ করে থানায় আনা হয়।
ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হকের অভিযোগ, স্থানীয় স্কুলশিক্ষক ওমর আলী ইজারাদারের কাছ থেকে পুকুর ইজারার শুরুতে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। তবে ব্যবসায়ী তাঁর প্রস্তাবে রাজি না হলে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নাজেহালের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। স্থানীয় ভাবে তিনি প্রভাবশালী। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলাও রয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
ব্যবসায়ীর অভিযোগ থানায় জানানোর পরেও পুলিশের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। ওমর আলী স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার কারণে এলাকায় তাঁর প্রভাব আছে। তিনি স্থানীয় একটি টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষক।
এই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক ওমর আলীর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এলাকাতেও সকালে দেখা যায়নি। তাঁর স্বজনদের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বাগমারা থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি সকালে দায়িত্ব নিয়েছেন। ঘটনা জানার পর থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ ফেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।