যশোরের জিআই পণ্য খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নির্ভেজাল গুড় উৎপাদন করার পরামর্শ দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয় সচিব নাসিমুল গণি। খেজুর গুড় যশোরবাসীর নিজস্ব শিল্প। যশোর জেলা খেজুর গুড় ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। আর চৌগাছার মানুষ সেই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে মেলার আয়োজন করেছে। আমি এই উপজেলারই একজন। এজন্য আমি এখানে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। নির্ভেজাল গুড় উৎপাদনের গ্যারান্টি দিতে পারলে সারা দেশের মানুষের কাছে যশোরের ব্র্যান্ড পন্য খেজুর গুড়ের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। প্রশিক্ষনের মাধ্যমে নতুন নতুন গাছি তৈরি করারও পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, এতিহ্যকে সমৃদ্ধ করতে মেলার আয়োজন খুবই ভালো উদ্যোগ। মেলা শব্দটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনে আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি হয়। মেলার আক্ষরিক অর্থ মিলন। মেলার সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির যোগাযোগ নিবিড় । বাংলার এই সংস্কৃতিতে থাকে সব ধর্মের মানুষের সমন্বয় । মেলাকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে আসে প্রাণচাঞ্চল্য। মেলার বিভিন্ন বিনোদনমূলক আয়োজন মুগ্ধ করে আগত দর্শনার্থীদের। ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার যশোরের চৌগাছায় তিনদিনব্যাপি গুড় মেলার সমাপণি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয় সচিব নাসিমুল গণি এসব কথা বলেন। মেলার সমাপনি অনুষ্ঠানের সভাপতি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার বলেন, যশোর থেকে কৃষি পণ্যবাহি বিশেষ ট্র্রেনে দেশের রাজধানীতে যশোরের খেজুর গুড় পৌছানোর ব্যবস্থা করা হবে। যাতে এই জেলার মানুষ খুব সহজেই গুড় ঢাকায় পৌছাতে পারে। দেশে বিদেশে যশোরের ব্রান্ড পন্য পৌছে দিতে অনলাইন বাজার তৈরি করার পরামর্শ দেন। তিনদিনব্যাপি গুড় মেলার সমাপনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আ. খ. ম. কবিরুল ইসলাম, খুলনা রেঞ্জের ডি.আই.জি রেজাউল হক (পিপিএম), যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, যশোর জেলা প্রশাক আজাহারুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহ, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তাসনিম জাহান, কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হুসাইন, উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃবৃন্দসহ উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি মেলায় গুড়ের স্টল পরিদর্শন করেন। তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেলায় শ্রেষ্ঠ ৩ জন গাছিকে পুরস্কার তুলে দেন। উপজেলার শ্রেষ্ঠ গাছির প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন স্বরুপদাহ ইউনিয়নের সাঞ্চডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক। উপজেলা প্রশাসনের তাকে দিয়েছেন ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন। দ্বিতীয় হয়েছেন পাতিবিলা ইউনিয়নের আবুল গাজি তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার টাকার চেক। ৩য় পুরস্কার পাঁচ হাজার টাকা করে পেয়েছেন সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মিজানুর রহমান । এছাড়া উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন থেকে মেলায় অংশগ্রহনকারি সকল গাছিদের বিশেষ পুরস্কার দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এর আগে ১৫ জানুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আবারাউল হাসান। তিনদিনব্যাপী মেলার দর্শানার্থীদের আকর্ষণের জন্য নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেলায় অংশ নেওয়া বিক্রেতারা জানান, এবারের মেলায় বেশ ভালো সাড়া পেয়েছেন তারা। প্রায় সারা দিনই ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ছিলেন। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছেন এমন মন্তব্যও করেছেন অনেকে।