পাবনার সুজানগরে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রমে জানুয়ারী মাস থেকেই শুরু হয়েছে জমজমাট প্রাইভেট বাণিজ্য। আর এই প্রাইভেট পড়া চলবে বার্ষিক পরীক্ষার আগ পর্যন্ত। মোট কথা ভাল ফলাফল অর্জন করতে প্রাইভেটই যেন শিক্ষার্থীদের এক মাত্র ভরসা। জানা যায়, সুজানগর পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৪৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৯টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওইসব বিদ্যালয়ের মধ্যে খুব কম বিদ্যালয় রয়েছে যেখানে সন্তোষজনক লেখা-পড়া হয়। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে তেমন লেখা-পড়া হয়না। ফলে ওই সব বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী জানুয়ারী মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ১২মাস প্রাইভেট পড়ে থাকে। আর এর মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আবার ফাইনাল পরীক্ষার আগ পর্যন্ত মোট ১৪মাস প্রাইভেট পড়ে থাকে। অভিভাবকরা জানায়, অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২/৪জন করে শিক্ষক আছেন যারা উপজেলায় ভাল প্রাইভেট শিক্ষক হিসেবে বেশ পরিচিত। তারা বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের চেয়ে প্রাইভেট পড়াতেই বেশি আগ্রহী। এদের মধ্যে অনেক শিক্ষক আবার শিক্ষার্থীদেরকে ভাল ফলাফলের জন্য প্রাইভেট পড়তে উৎসাহিত করেন। ফলে অভিভাবকরা নিরুপায় হয়ে তাদের সন্তানের ভাল ফলাফলের জন্য ওই সকল শিক্ষকদের কাছে ধর্না দেন। নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন অধিকাংশ প্রাইভেট শিক্ষক তাদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ের আশপাশে বাসা ভাড়া নিয়ে আবার কেইবা বাড়িতে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সু-ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তারা সরকারের নিয়ম নীতিকে উপেক্ষা করে সকালে এবং বিকালে শ্রেণি কক্ষের ন্যায় প্রতি ব্যাচে ৩০থেকে ৪০জন করে শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ায়ে থাকেন। বিশেষ করে অংক এবং ইংরেজী বিষয়ের শিক্ষকরা শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের চেয়ে প্রাইভেট পড়াতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রধান শিক্ষক বলেন ওই সকল শিক্ষকদের প্রাইভেট বাণিজ্যের কারণে সরকারের সময়োপযোগী তথা মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সোলায়মান হোসেন বলেন প্রাইভেট এবং কোচিং বাণিজ্যের এ চিত্র দেশব্যাপি। সুতরাং ওই বাণিজ্য বন্ধে প্রয়োজন সরকারের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ।