বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান ও তার প্রভাব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সরাসরি বিএনপির অবস্থান ও নেতৃত্বকে দায়ী করে একাধিক কড়া মন্তব্য করেছেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, বিএনপি নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থানকে নিজেদের স্বার্থের জন্য হুমকি মনে করছে। তিনি বলেন, "গণ-অভ্যুত্থানের পরে দেশের কাঠামোগত পরিবর্তন ও নতুন রাজনৈতিক শক্তির প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট। তবে ছাত্র-জনতার সম্মিলনে একটি নতুন দলের উত্থানের সম্ভাবনা দেখেই বিএনপি এটিকে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে তাদের কিছু আসে-যায় না। অথচ তিনি ভুলে গেছেন, এই আওয়ামী লীগ বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।
হাসনাত আরও অভিযোগ করেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একে অপরকে রাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এক জাতীয় দৈনিকের বরাত দিয়ে তিনি দাবি করেন, "নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ বানচাল করতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উদ্বেগ ও শঙ্কা আদান-প্রদান করেছে।"
তিনি বলেন, "বিএনপি যদি আওয়ামী লীগের পুনঃপ্রবেশ মেনে নিতে পারে, তবে ছাত্র-জনতার সম্মিলনে নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান তাদের এত দুশ্চিন্তার কারণ কেন?"
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "ছাত্ররা যদি একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করে এবং তাদের প্রতিনিধি সরকারে থাকে, তবে সেটা নিরপেক্ষতার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে।"
হাসনাত তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান চায় না এবং তারা ক্ষমতায় যেতে কোনো পরিবর্তন আনতে আগ্রহী নয়।"
হাসনাত তার পোস্টে বিএনপির অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও নেতৃত্বের সিদ্ধান্তগুলোকেও সমালোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, "বিএনপি ১/১১ সরকারের ফর্মুলা নিয়ে হাজির হলেও গণঅভ্যুত্থানের সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে ব্যর্থ হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "যারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে মাঠ থেকে সরে যায়, তারাই আজ ভারতনির্ভর কূটনীতি ও আঁতাতের রাজনীতির মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়।"
রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দলের উত্থান নিয়ে এই বিতর্ক দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। নতুন দলের পক্ষ থেকে কাঠামোগত পরিবর্তন এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয়ই এই উদ্যোগে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে পারে। তবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়ছে।