ঢাকা কলেজের শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নতুন পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেছেন এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তারা জানান, সাত কলেজের জন্য নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সরকারের আশ্বাস গ্রহণ করার পরও কিছু দাবি পূর্ণ না হওয়ায় তারা এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়ে বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নানা সমস্যার মুখোমুখি ছিলেন, বিশেষ করে পরিচয় ও প্রশাসনিক সুবিধা নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল। তবে, সরকারের আশ্বাস অনুযায়ী, সাত কলেজের সমন্বয়ে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তারা এজন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তবে, ছাত্রদের দাবি, পূর্বঘোষিত ছয় দফা দাবির মধ্যে মাত্র একটি বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি দাবিগুলোর জন্য তারা ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন। সময়সীমা শেষ হলে, তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
শিক্ষার্থীদের নতুন ৫ দফা দাবি: ১. শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রকাশ করতে হবে। ২. এক মাসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ৩. সকল বর্ষের চলমান পরীক্ষা পূর্বঘোষিত রুটিন অনুযায়ী চলমান থাকবে। ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরুর সাথে সাথেই চলমান সকল শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ৫. উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাত কলেজের চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে দুই দিনের মধ্যে টেবিল টক আয়োজন করতে হবে।
আগে থেকে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট থানা ঘেরাও এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস সাত কলেজের সামনে দিয়ে চলাচল নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছিল। তবে, সরকারের সঙ্গে আলোচনা ও বৈঠকের পর তারা সেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের নেতা মঈনুল ইসলাম জানান, তাদের ছয় দফা দাবির বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, এবং তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, যদি তাদের নতুন পাঁচ দফা দাবি পূর্ণ করা না হয়, তাহলে তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন এবং আরও কঠোর আন্দোলন শুরু হবে।