বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, সৈরাচারের মাথাটা পালিয়ে গেছে। কিন্তু স্বৈরাচারের কিছু কিছু অবশিষ্ট রয়ে গেছে বাংলাদেশে। যে কোন সময় তারা ভিন্ন আঙ্গিকে মাথাচারা দেয়ার অপচেষ্টা করছে। যদি দেশকে রক্ষা করতে হয়, দেশের মানুষেকে রক্ষা করতে হয় তাহলে ঐক্যের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্টার জন্য সৈরাচারের বিরুদ্ধে যত মানুষ প্রতিবাদ করেছে প্রত্যেকটি মানুষ হয়েছে অত্যাচারিত। তিনি শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আব্বাস উদ্দিন খান সোহাগপুর মডেল কলেজ মাঠে জেলা বিএনপি‘র সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি‘র বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, আমাদের মধ্যে মত পার্থক্য থাকতে পারে, যারা আমরা দেশের জন্য কাজ করতে চাই দিন শেষে আমরা এক। আমাদের সামনে প্রচুর কাজ, দেশকে পুনঃগঠনের কাজ। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রযন্মের শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বেকারত্ব দূরীকরণ, কৃষি ও শিল্পখাতে উন্নয়ন ৩১ দফায় অন্তভূক্ত করা হয়েছে। আমরা কৃষককে ন্যায্যমূল্য দিতে চাই। তবে লাগমহীন দ্রব্যমূল্য উর্ধগতি যেন জনগনের মধ্যে নাভিশ্বাষের কারণ না হয়। তিনি আরো বলেন, অচল কর কারখানাগুলোকে সচল করতেক মহবে। আমাদের অসংখ্য নদ নদী ও খাল ভরাট হয়ে গেছে। এগুলো খনন করতে হবে। আগামী দিনে সংসদের মেয়াদ কত হবে, সংখ্যা কত হবে গনতান্ত্রীক রাষ্ট্রে এই বিতর্ক থাকতেই পারে। দিন শেষে আমরা এগুলো জনগনের উপর ছেড়ে দিব। এই নিয়ে মাত্রতিরিক্ত বিতর্ক রাষ্ট্র মেরামতের কাজকে বিঘ্নিত করবে। তবে এর একমাত্র উপায় হল জাতীয় নির্বাচন। জনগনের ভোটের মাধ্যমে এর ফয়সালা হবে। তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর জনগনের ভোট দেয়ার অথিকার ছিল না। জবাবদিহীতা ছিল না। অস্ত্রের মুখে সব অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আমরা ডামি নির্বাচন ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন দেখিছি। উন্নয়নের নাম করে সামান্য জিনিস দৃশ্যমান করা হলেও এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। রাষ্ট্র্রের সমস্থ প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে। বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। এই দলের কর্মী হিসেবে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে জাতিকে পথ দেখাতে হবে। শুধু আমাদের দলই নয় দেশের যে সকল রাজনৈতিক দল যাদের এজেন্ডা দেশ ও দেশের মানুষ তাদের সাখে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ব থাকতে হবে এটাই হোক এই সম্মেলনের প্রতিজ্ঞা ও শপথ। উদ্বোধকের বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কাউকে হত্যা করে এ দেশের ক্ষমতায় আসেননি। সিপাহী জনতার বিপ্লবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশের সিপাহী জনতা শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসান। এরপর তিনি এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, আজ দেশের দেড় কোটি মানুষ মধ্যপ্রচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকরি করেন। সেই বৈদেশিক শ্রম বাজার জিয়াউর রহমান চালু করেন। ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের পোশাক শিল্পও জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে পোশাক শিল্প আর বৈদেশিক রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিকে আজ চাঙ্গা করেছে। এসব অবদান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের। সেই ইতিহাস আওয়ামী লীগ বদলে দিতে চায়। জেলা বিএনপি‘র আহবায়ক এডভোকেট আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন বিএনপি‘র কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো: সেলিম ভুইয়া,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মোস্তাক আহম্মেদ,বিএনপি‘র কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন শ্যামল, বিএনপি‘র কুমিল্লা বিভাগীয় সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো: সায়েদুল হক সাইদ বিএনপি‘র কেন্দ্রীয় নির্বাহি কমিটির সদস্য শেখ মো: শামীম,সালাউদ্দিন শিশির,জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি,সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো:জহিরুল ইসলাম,জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো: সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও জেলা বিএনপি নেতা মো: কবির আহম্মেদ ভুইয়া প্রমুৃখ। এদিকে দীর্ঘ ্প্রায় এক যুগ পর জেলা বিএনপির এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলার সর্বত্রই ছিল উৎসবের আমেজ।শনিবার সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন রং-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসতে থাকে।দুপুর ১২টার আগেই দলীয় নেতাকর্মিদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। উল্লেখ্য এই সম্মেলন কেন্দ্র করে জেলা বিএনপি‘র দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।গত ২৮ ডিসেম্বর ও ১৮ জানুয়ারী দুদফা তারিখ নির্ধারন করেও তা সম্ভব হয়নি।