সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা টানা পঞ্চম দিনের মতো অনশন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে মহাখালী-গুলশান সড়কের তিতুমীর কলেজের সামনে বাঁশ দিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন তারা। এতে উভয় দিকের যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে গুলশান-মহাখালী সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। গণপরিবহন সংকটের কারণে সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাইমুর নামে এক চাকরিজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিদিন একই অবস্থা, আমরা কষ্টে আছি। সরকার কেন দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে না?’
অপরদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশ বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা পিছু হটবেন না। তারা জানান, ‘আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস না আসায় আমরা বাধ্য হয়ে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঢাকার সাত কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের লক্ষ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে এবং তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে, আলটিমেটাম দিয়ে দাবি আদায়ের যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছে মন্ত্রণালয়।
তবে শিক্ষার্থীরা এই বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমাদের সাত দফা দাবি এখন এক দফায় পরিণত হয়েছে—তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে।’
টানা আন্দোলনের কারণে অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ পর্যন্ত চারজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মফিজুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের আবু নাঈমসহ কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের বিষয়টি বিবেচনা করে তারা কিছুটা শিথিলতা এনেছেন।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়লেও শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে। এখন দেখার বিষয়, সরকার কত দ্রুত এই সংকটের সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।