ঢাকা: সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এর সর্বশেষ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের আন্দোলন আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘তিতুমীর ঐক্য’র পক্ষ থেকে এ ঘোষণা আসে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য তাদের দাবি এবং আগের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, এবং এটি তাদের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে উদ্বুদ্ধ করছে। তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, “অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ-এর বক্তব্য সম্পূর্ণ দ্বিচারিতা এবং আগের মন্তব্যের সঙ্গে একেবারেই অসঙ্গতিপূর্ণ। আমরা এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি, এবং সামনে আরও কঠোর আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এর আগে, পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, "তিতুমীর কলেজসহ সাত কলেজকে নিয়ে সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে, যারা স্বতন্ত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। তবে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে সময় বেঁধে দেওয়া যৌক্তিক নয়।" তিনি আরও বলেন, "শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে অযৌক্তিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করলে, সেই সিদ্ধান্ত পরবর্তী সরকারের উপর চাপ তৈরি করবে, যা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।"
এদিকে, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ৫ দিনের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতির দাবিতে অনশন করছেন। তাদের মধ্যে একজন, রানা আহমেদ নামে একজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
‘তিতুমীর ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্যের বিরুদ্ধে আজই রাস্তায় নেমে কঠোর আন্দোলন করবেন। তারা দ্রুত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করবেন এবং রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যারিকেড কার্যক্রম শুরু করবেন। আন্দোলনকারীরা ফেসবুক পেজে ঘোষণা দিয়েছেন, “আজই মানে এখনই ব্যারিকেড হবে, সবাই দ্রুত আন্দোলনে যোগ দিন।”
তিতুমীর কলেজের আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে চলছে, এবং শিক্ষার্থীদের দাবি এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে মেনে নেওয়া হয়নি। তাদের আন্দোলন একাধিকবার শহরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে, তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না।