সৈই বরখাস্ত ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০১:৪৪ পিএম : | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম
সৈই বরখাস্ত ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিচার শুরু
ফাইল ছবি

সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানির মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিচার কার্যক্রম শুরু হলো।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন এবং অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে দেন। আদালতের এই আদেশের ফলে মামলাটি আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়ার দিকে অগ্রসর হলো।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি আদালতে হাজির হন। তার পক্ষে আইনজীবী পি এম মাহাদী হাসান অব্যাহতির জন্য আবেদন করেন। তিনি যুক্তি দেন যে, মামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তার মক্কেল নির্দোষ।

তিনি বলেন, "আমার মক্কেল শুধুমাত্র একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেছেন, যা বাদীর সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নয়। দণ্ডবিধির ৪৯৯/৫০০ ধারার বিধান অনুযায়ী মানহানির অভিযোগ কেবল সেই ব্যক্তি তুলতে পারেন, যার বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে অথবা তার নিকটাত্মীয়। বাদী শহীদ আবু সাঈদ বা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রক্ত সম্পর্কিত কেউ নন। কাজেই মামলার আইনগত ভিত্তি নেই।"

অন্যদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, "আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মানহানিকর পোস্ট দিয়েছেন। বাদী এই আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং ১১ দিন কারাভোগ করেছেন। সুতরাং মামলার বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠে না।"

গত বছরের ৫ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন, যেখানে শহীদ আবু সাঈদসহ অন্যান্যদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। একই পোস্টে তিনি নোবেল বিজয়ী ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কেও অবমাননাকর বক্তব্য দেন বলে বাদীর অভিযোগ।

এরপর ৮ অক্টোবর গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে আসামিকে হাজির হতে সমন জারি করেন।

ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট দেওয়ার পর ৬ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে বদলি করে। পরদিন ৭ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

অভিযোগ গঠনের ফলে মামলার বিচার এখন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক এবং সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।

এই মামলাটি আইনের শাসন ও সরকারি কর্মকর্তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ এক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে