মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম খান

এফএনএস (মোঃ হাবিবুর রহমান খান; কুমিল্লা) : : | প্রকাশ: ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:৫৬ পিএম : | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম
মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম খান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশর মাটিতে আর ফ্যাসীবাদের উত্থান হতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ একটি অভিশপ্ত দল। তারা ক্ষমতায় থাকতে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। লুটপাট করেছ।বিগত সাড়ে ১৫ বছরে  নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছে। তারা অবৈধভাবে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলো। নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছিলো। বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।  তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন এতো উন্নয়নের রোলমডেল হলে দেশ ছেড়ে পালালেন কেন? জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফাসির কাষ্ঠে গেলেও কখন দেশ ছেড়ে পালাননি। মূলত আওয়ামী লীগকে পালাতে হয়েছে নিজেদের অপকর্মের কারণে। দুর্নীতির করে সার্টিফিকেট না থাকা ব্যক্তিকেও বিচারপতি বানিয়েছেন। তাদের আমলে নিয়োগ পাওয়া আপিল বিভাগের  বিচারপতিরা ছিলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাঠিয়াল বাহিনীর সদস্য। তাদের ব্যবহার করে নিজেদের পক্ষে রায় আদায় করেছে। তিনি আরও বলেন বিগত সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াত। যাকে তাকে জামায়াত-শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করেছে। জুলাই-আগস্ট এর আন্দোলনে দুই হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। অনেকের লাশ গুম করেছে। অনেকের লাশ পুড়িয়ে ফেলেছে। কিন্তু খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারে সরকার দৃশ্যমান কোনো কাজ করেনি।প্রশাসনে এখন ফ্যাসীবাদের দোসররা বুক ফুলিয়ে চলছে। তিনি তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন।দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমানোর দাবি জানান। তিনি অভিযোগ করেন ভোটার তালিকায় গোঁজামিলের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। তিনি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা ও প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান। তিনি জামায়াতের কারাবন্দী সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি এটি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তি দাবি করেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের পরিবার ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবি করেন।

শনিবার  ১০টায় কুমিল্লার মুরাদনগরের ডিআর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মুরাদনগর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবু নছর মুহাম্মদ ইলইয়াস এর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিল সভাপতি  ও সাবেক চাকসু ভিপি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর মুরাদনগরে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ হওয়ায় নেতাকর্মীরা ছিলেন উচ্ছ্বসিত। সকাল ৯টায় সম্মেলন শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই নেতাকর্মীদের পাদচারণায় মুখর হয় ডিআর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রাম থেকে মিছিল সহকারে অংশগ্রহণ করেন নেতাকর্মীরা। মাওলানা আমির হোসেন ও মাওলানা মিজানুর রহমান এর যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আমির আব্দুল মতিন, জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক আলমগীর সরকার,কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতে সেক্রেটারি ও দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শহীদ, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক লোকমান হাকিম,ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ডা.মোহাম্মদ তফাজ্জল হোসেন,বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের  কুমিল্লা উত্তর জেলা সভাপতি অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, বাঙ্গরা বাজার থানা আমির মাষ্টার আব্দুর রহিম,উপজেলা সাবেক আমীর,মনসুন মিয়া,সাবেক আমীর,অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন মোহাম্মদ ফারুক। সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ইউসুফ সোহেল, অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ,শিবিরের কুমিল্লা উত্তর জেলা সেক্রেটারি শাকিল আহমেদ, মাওলানা আবু বক্কর। প্রধান বক্তার বক্তব্যে চাকসুর সাবেক ভিপি অ্যাডভোকেট জসীমউদ্দিন সরকার বলেন-বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী শক্তিকে দমন করার জন্য আয়নাঘর তৈরি করেছিলো যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। তিনি বলেন খুনিদের দল আওয়ামী লীগের অপরাধীদের বিচার করতে হবে। গণতন্ত্র আর আওয়ামী লীগ একসাথে চলে না।তারা পিলখানায় হত্যা করেছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বকে বিচারিক হত্যা করেছে। আল্লামা সাঈদীকে মেডিকেল কিলিং করা হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে পুনঃ তদন্ত দাবি করেন। আগামীতে ইসলামী শক্তির পক্ষে কাজ করতে তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন বিগত দিনে মুরাদনগরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। মূলত দুর্নীতি ও লুটপাটের  কারণে। তাই সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্বকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে