রাজশাহীর বাঘায় ৩১ লক্ষ টাকা দিয়েও ছেলে সেলিম হোসেনের মৃত্যুর খবর শুনলো বাবা আফজাল হোসেনকে। এমন ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আলাইপুর মহাজনপাড়া গ্রামে। জানা গেছে, সেলিম হোসেন (২৫) দেড় বছর আগে সংসারের অভাব মেটানোর জন্য উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের ইনছার আলীর ছেলে শহীদ হোসেন ও আলাইপুর গ্রামের মহসিন আলীর ছেলে আবদুল বারির মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার জন্য সাড়ে ১২ লাখ টাকার চুক্তি হয়। টাকা পরিশোধের পর ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুদিন পর লিবিয়ায় আটকা পড়েছে বলে সেলিম হোসেনের পিতা আফজাল হোসেনের কাছে আরও ২৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। উপায় না পেয়ে জমি বিক্রি করে ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়া হয়। পর্যায়ক্রমে ৩১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিয়েও ছেলের মৃত্যুর খবর শুনতে হলো বাবা আফজাল হোসেনকে। এ বিষয়ে সেলিম হোসেনের পিতা আফজাল হোসেন বলেন, ছেলেকে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শহীদ হোসেন ও আবদুল বারির সাথে সাড়ে ১২ লক্ষ লাখ টাকায় চুক্তি হয়। সেই মোতাবেক তাদের টাকা দেওয়া হয়। তারা ছেলেকে বাড়ি থেকে নিয়েও যান। দেড় বছর হয়ে গেলো ছেলের কোন খবর পায়নি। তাদের কাছে গেলে জানান সেলিম লিবিয়ায় আটক পড়েছে। ছেড়ে নিতে হলে আরও টাকা লাগবে। তাদের উপর বিশ্বাস রেখে পর্যায় ক্রমে ৩১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছেলের কোন খবর তারা দেয় না। ছেলের চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠলে তারা বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে স্ট্রোক করে সেলিম মারা গেছে বলে জানান। এরপর তাদের কাছে ভিডিওতে ছেলেকে দেখতে চেয়েছি, কিন্তুু তারা দেখায়নি। কোন উপায় না পেয়ে পরের দিন বাঘা থানাকে অবগত করা হয়েছে। এ দিকে নির্যাতন করে মারা হয়েছে বলে সেলিমের পিতা দাবি করেন। এ বিষয়ে সেলিমের ছোট ভাই ইমন হোসেন বলেন, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তারা ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও ২ বিঘা জমি নিয়েছেন। তারা পরিকল্পিতভাবে ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে শহীদ হোসেন ও আবদুল বারীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। পাকুড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার ও আলাইপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, আমার গ্রামের ঘটনা। সেলিমের পরিবারের সাথে কথা হয়েছে। তারা এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি করেছেন। বাঘা থানার ওসি আ.ফ.ম আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে।