পিরোজপুরের কাউখালীতে চিকিৎসকের অভাবে রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। রোগীরা অসহায় পড়েছে। কোথায় চিকিৎসা করবে কি করবে তারা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এমনি নেই ভবন তারপর আবার নেই চিকিৎসক। উভয়ে সংকটের মধ্যে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স। হাসপাতালের অবস্থা এতই করুন যে নিজেই এখন রোগী হয়ে বসে আছে, কে করবে চিকিৎসা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী দেখছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। হাসপাতালে ভর্তি আরো ২০ থেকে ২৫ জন রোগীর খোঁজখবরও নিতে হয় ঐ একজন চিকিৎসকের। উপচে পডা রোগী সামাল দিতে অফিসের নিজ কক্ষে অনেক সময় রোগী দেখছেন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার ইশতিয়াক আহমেদ। রোববার ৯ ফেব্রুয়ারী বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, মাত্র একজন চিকিৎসক ডাক্তার সুব্রত কর্মকার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসার একমাত্র প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দিনমজুর সহ নিম্ন আয়ের লোকেরা সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে। চিকিৎসকের অভাবে অনেক সময চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পার্শ্ববর্তী রাজাপুর, ভান্ডারিয়া, পিরোজপুর সদর কিংবা বরিশাল মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যায়। এক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের সহ গরিব রোগীদের ভোগান্তির কোন শেষ থাকেনা। অনেকেই চিকিৎসার অভাবে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রারন্ত হচ্ছেন। কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউনানী চিকিৎসক সহ ১৫ জন চিকিৎসকের স্থলে আছে মাত্র একজন মেডিকেল অফিসার। বাকি পাঁচটি ইউনিয়নে কোন মেডিকেল অফিসার নেই। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসুস্থ রোগীরা সময় মত চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে না।হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সেলিনা বেগম ও ফোরকান আহমেদ বলেন, হাসপাতালে নির্ধারিত চিকিৎসক না থাকায় তাদের চিকিৎসা সেবা নিতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। চিকিৎসকদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রোগীদের খোঁজখবর নিতে পারছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র চিকিৎসক ডাক্তার সুব্রত কর্মকার বলেন, কি আর করা প্রতিদিন প্রায় ২৫০ জন রোগী আমার একার দেখতে হয়। তার উপর আবার নাইট ডিউটি করতে হয়। আপনারা যদি পারেন আপনাদের লেখার মাধ্যমে কয়েকজন চিকিৎসক আনার ব্যবস্থা করেন। এমনি ঝুঁকিপূর্ণ অস্থায়ী ভবনে আমাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হয়। ভবনের কাজও বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকটে কথা নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ অস্থায়ী ভবনে মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বাধ্য হয়ে আমি অফিশিয়াল কাজে ফাঁকে ফাঁকে রোগী দেখার চেষ্টা করছি। জনবল সংকট সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে আমি অবগত আছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে চিকিৎসক দেওয়াার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।