পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
বিকেল ৪টার পর শাহবাগে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করলে পুলিশ তাদের থামানোর চেষ্টা করে। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার সময় উসকানিমূলক স্লোগান দেয়। তবে পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সরিয়ে দেওয়ার হয়েছে।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে লাঠিচার্জ করেছে, যা তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর সরাসরি হামলা। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
ম্যাটস শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে তিন মাস ধরে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। তাদের দাবিগুলো হলো: 1. অনতিবিলম্বে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ। 2. কর্মসংস্থান ও সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ সৃজন। 3. কোর্স কারিকুলাম সংশোধন ও প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট করা। 4. প্রস্তাবিত ‘অ্যালাইড-হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড’ বাতিল করে স্বতন্ত্র ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান।
বিকেল ৩টার পর শাহবাগ থেকে শিক্ষার্থীদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন আজহারুল হক রামিম, মুজাহিদুল ইসলাম, হাসিবুল ইসলাম শান্ত, আহমদ উল্লাহ মানসুর ও শামীম মিঞা। তারা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সঙ্গে বৈঠক করেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবী জানান, উপ সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগের বিষয়ে দ্রুত সার্কুলার জারি করা হবে। তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে, প্রতিশ্রুতির পরও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা আন্দোলন চালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার জন্য বারবার আহ্বান জানানো হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের স্লোগান ও ব্যারিকেড ভাঙার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করা হয়েছে।