গুয়াতেমালায় সেতু থেকে বাস গিরিখাতে পড়ে নিহত ৫১

রয়টার্স : | প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৩:২১ পিএম
গুয়াতেমালায় সেতু থেকে বাস গিরিখাতে পড়ে নিহত ৫১

গুয়াতেমালায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫১ জন। স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে রাজধানী গুয়াতেমালা সিটির কাছাকাছি পুয়েন্তে বেলিস সেতুতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি সান অগাস্টিন আকাসাগুয়াস্টলান শহর থেকে যাত্রী নিয়ে রাজধানীর দিকে যাচ্ছিল। সেতু পার হওয়ার সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ২০ মিটার নিচের গিরিখাতে পড়ে যায়।

গুয়াতেমালার অগ্নিনির্বাপণ বাহিনীর মুখপাত্র কার্লোস হারনান্দেজ জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৩৬ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় একটি মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র মাইনর রুয়ানো বলেন, ধ্বংসাবশেষের নিচে এখনো অনেকে আটকে থাকতে পারে। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনাস্থলের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে দেখা গেছে, দূষিত পানির মধ্যে উল্টে থাকা বাসটির একটি অংশ ডুবে আছে এবং উদ্ধারকর্মীরা আহত ও নিহতদের বের করে আনছেন। দুর্ঘটনাটি ঘটে এমন একটি স্থানে, যেখানে সেতুটি দুই পাশে সড়ককে সংযুক্ত করেছে এবং নিচে একটি গভীর গিরিখাত রয়েছে।

গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট বেরনার্দো আরেভালো তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, "আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। যেসব পরিবার এই হৃদয়বিদারক সংবাদে জেগে উঠেছেন, তাদের কষ্ট আমার নিজের কষ্ট।" রাষ্ট্রপতি সেনাবাহিনী ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাকে উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, জরুরি পরিষেবা মোতায়েন করে দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারকাজ পরিচালনার নির্দেশ দেন তিনি।

গুয়াতেমালা সিটির মেয়র রিকার্ডো কুইনোনেজ জানান, ট্রাফিক পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় বিকল্প রুট স্থাপনের কাজ করছে, যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা যায়। জাতীয় সিভিল পুলিশ অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে এবং প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা দেবে বলে জানানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসটি অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ছিল এবং সেতুতে উঠার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চালকের অসাবধানতা বা বাসের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে।

গুয়াতেমালায় এর আগেও সড়ক দুর্ঘটনায় বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বারবার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই দুর্ঘটনা আবারও সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW