লক্ষ্ণীপুরের রামগতিতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (দোকান) মালামালসহ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেন। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার রামগতিরহাট বাজারের মীররোড এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় পল্লী বিদ্যুতের ১১ কেবি লাইনের তারসহ ২টি খুটি, ৩৫ টি মিটার এবং ৩৫টি সার্ভিস ড্রপতার পুড়ে যায়। ওই রোডে মাসুদ নামের এক ব্যবসায়ীর জ্বালানি তেল ও সিলিন্ডার গ্যাসের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে স্থানীয়রা জনান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রামগতি বাজারের মীররোডের মাসুদ আলমের তেল ও গ্যাস সিলিন্ডার দোকান থেকে ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান ব্যবসায়ীরা। মুহূর্তেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর মধ্যে মাসুদের তেল-গ্যাসের দোকান, ইব্রাহিম খলিল ও নুর উদ্দিনের মুদি দোকান, উত্তম সাহা ও রাশেদুলের হার্ডওয়ার দোকান, জাহের মোল্লার হোটেল, মাইন উদ্দিন, ছারোয়ার ও আবদুল বাচেতের ঔষুধের দোকান, মা ভেটেনারি, আমিরের জুতার দোকান, হেলালের দোকান, নাহার মঞ্জিল ও মা স্টুডিও, ধনু, জামাল উদ্দিন ও দিদারের তরকারি দোকান, যতনের সেলুন ও মাও. জাহেরের কাজী অফিসসহ ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ভষ্মীভূত হয়ে যায়। এতে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মাসুদ আলম বলেন, ‘রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যাই। ভোরে খবর পাই সকালে বাজারে আগুন লেগেছে। পরে এসে দেখি দোকানগুলো পুড়ে গেছে। এতে আমার কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অনেক দেনা-পাওনা করে ব্যবসা করছি। এখন কী করব? সব দিকে অন্ধকার। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই সামনে চলতে পারব না।’
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রামগতি স্টেশনের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর মো. জাকির হোসেন বলেন, দুটি ইউনিট ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। এর মধ্যে ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে ওই রোডের তেল-গ্যাসের দোকানে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, মাসুদ আলমের তেল ও গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান থেকে আগুন লেগেছে। তেল ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর ভয়াবহ আগুনের সৃষ্টি হয়। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, ফায়ার সার্ভিস এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়কে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরী করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তাদের সরকারি সহয়তা দেওয়া হবে।