সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায়, জামালপুরে মেলান্দহে মৃৎ শিল্পের দুর্দিন চলছে। অথচ এক সময় এই অঞ্চল মৃৎ শিল্পের জন্য বেশ পরিচিত ছিল। কালের বিবর্তনে এই শিল্পটি প্রায় হারিয়ে গেলেও, ধরে রেখেছে উপজেলার একমাত্র গ্রাম মেঘারবাড়ি এলাকার পাল সম্প্রদায়ের ৮টি পরিবার।
পাল বংশের মুষ্টিমেয় এই পরিবারগুলো তাদের পূর্ব পুরুষের এই শিল্পের কাজটি ধরে রাখতে নেমেছেন জীবন যুদ্ধে। আধুনিক যুগের নিত্য পণ্যের বাহারে হাতের তৈরি পণ্য প্রায় বিলুপ্ত হলেও; এই শিল্পের চাহিদাও হুমকির মুখে। অথচ একদিন মাটির তৈরি থালা, বাটি, হাড়ি পাতিল, খেলনা, সৌখিন পণ্য সামগ্রীসহ নিত্য পণ্যের চাহিদা ছিল। আধুনিকতার ছোয়ায় অনেকটা বে-মানান।
শিল্পের কারিগর দিপালি রাণী পাল (৪২) জানান-আমার বুদ্ধি হবার পর থেকেই এই কাজে জড়িত। আগের মতো মাটি পাওয়া যায় না। মাটির তৈরি পণ্য আগের মতো চাহিদাও নেই। কারিগরও পাওয়া যায় না। বিলুপ্ত প্রায় পেশায় কেও আসতে চায় না। অনেকেই পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। আমরাতো সমাজের ভিন্ন শ্রেণির মানুষ। তাই সহজে অন্য কোন পেশায় যেতে পারছি না। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে যত টুকু করতে পারছি, তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরার উপক্রম। অনেক কষ্টের উপার্জন দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলার ভাষা নেই।
ঘাটোর্ধ বয়সি হরিচরণ পাল জানান-বাল্যকাল থেকেই আমি এই পেশায় আছি। বাপ-দাদারাও এই পেশায় ছিলেন। এক গাড়ি মাটি কিনতে হয় ৪./৫ হাজার টাকায়। তাও সব মাটি চলে না। সরকারি কোন সাহায্য বা সহযোগিতা নেই। এনজিও কিংবা ব্যাংকের কোন ঋৃণের সুবিধা পেলে শিল্পটার উন্নতি করতে পারতাম। রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া একটা শিল্প বা গ্রামীণ ঐতিহ্য সংরক্ষণ সম্ভব নয়।