ঘন্টা দেড়েক অপেক্ষা করেও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে কার্যালয় ছেড়ে ভবনের নীচে এসে সড়কে সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তির চেক বিতরণ করেছেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারী) দুপুর দেড়টার দিকে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নীচের রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই চেক বিতরণ করা হয়। এ সময় ময়মনসিংহে কর্মরত ২১ জন সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের মাঝে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টের উদ্যোগে শিক্ষা বৃত্তির চেক বিতরণ হয়। প্রসঙ্গত সাংবাদিকদের সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের এ অনুষ্ঠানটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুপুর ১২টায় অনুষ্টিত হওয়ার কথাছিল। কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দুপুর ১২টার সময়ই জেলা প্রশাসকের কক্ষে উপস্থিত হয়ে অপেক্ষা করেন। পাশের রুমে সভাতে ব্যস্ত ছিলেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল ইসলাম। দেড় ঘন্টা অপেক্ষা করলেও জেলা প্রশাসক সভা ছেড়ে এসে ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে দেখা করেন নি। কিংবা তার কোনো স্টাফকেও পাঠান নি। এরপর কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেলা প্রশাসকের কক্ষ থেকে বের হয়ে নীচে সড়কে চলে আসেন। এবং রাস্তায় দাঁড়িয়েই তিনি চেক বিতরণ করেন। চেক বিতরণ শেষে উপস্থিত সাংবাদিক এবং তাদের সন্তানদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এসডি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ময়মনসিংহ এসে আমরা ভিন্ন অভিজ্ঞতা পেলাম। বাংলাদেশে আমলা শ্রেণী পর্যায়ের মধ্যে যারা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন তারা নিজেদের রাজা মনে করেন, আর যারা জেলায় বসবাস করে তারা সবাই প্রজা। এই মানসিকতা পরিবর্তন না হলে আমরা যতই পরিবর্তনের গল্প শোনাইনা কেন, এটার কোন উন্নতি হবে না। তিনি বলেন জেলা প্রশাসকের ব্যস্ততা থাকতে পারে। কিন্তু ন্যূনতম সৌজন্যতা বোধ দেখান নি। তিনি বলেন সিভিল সার্ভিসে ঢুকার সময় যে সভ্যতা, ভদ্রতা শেখানো হয় এক্ষেত্রে আমরা ব্যত্ত্যয় দেখেছি। এই দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা আমাদের যেন আগামী দিনে না হয়, সে ব্যাপারে ভাবতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের (সাংবাদিক) ডেকে এনেছি এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি’। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন আজকে যারা চেক পেয়েছেন আগামী বছর তারা ভালো ফলাফল করে সাংবাদিক কল্যান ট্রাস্টে জমা দিলে তাদের জন্য এই শিক্ষা বৃত্তি অব্যাহত থাকবে। ফলাফল ভালো হলে মাষ্টার্স পর্যন্ত চলবে এই বৃত্তি কার্যক্রম। তবে নতুন করে যারা আবেদন করতে চান তাদেরকে আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সভাপতি এম. আইয়ুব আলীর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারন সম্পাদক ও ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় চেক বিতরণ শেষে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খাইরুল বাশার। এ সময় তিনি আরও বলেন, আগামী ডিসেম্বরে এবিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে। বছরে একবার এই বৃত্তি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আসন্ন রমজানে সাংবাদিকদের জন্য একটি ইফতার উপহারের প্রস্তুতি চলছে, ছোট আকারে তালিকা পেলে আমরা ইফতার পৌঁছানোর চেষ্টা করব। এছাড়াও সাংবাদিকদের অন্যান্য যে সব সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা আছে, সে ভাবে আবেদন করলে তারও ব্যবস্থা হবে, বলেও তিনি সাংবাদিকদের আশ্বাস্ত করেন। তবে এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুফিদুল আলমকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেন নি।